‘হত্যার শিকার’ কিশোরী জীবিত উদ্ধার: নারায়ণগঞ্জে ওসি-এসআইকে আদালতে কারণ দর্শানোর আদেশ

ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করে তিন আসামি স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর কিশোরী জীবিত উদ্ধারের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান ও ক্লোজড হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম আল মামুনকে কারণ দর্শানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কাউসার আলম এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে তিনি তিন আসামির জামিন ও কিশোরীর স্বামী ইকবালের রিমান্ডের শুনানি আগামী ৩১ আগস্ট ঠিক করেন।

এসময় ইকবালকে আদালতে হাজির করা হলেও পুনরায় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. রোকন উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত ২৫ আগস্ট তিন আসামির জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। একই সঙ্গে পুলিশ ইকবালের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আসামিদের উপস্থিতিতে জামিন ও ইকবালের রিমান্ড আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আসামিদের উপস্থিত না করায় আদালত আগামী ৩১ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান ও তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামীমকে আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে “কীভাবে মৃত ব্যক্তি জীবিত হলো এবং কেন জীবিত ব্যক্তিকে মৃত করা হলো” এ বিষয়ে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যাসহ কারণ দর্শানোর আদেশ দিয়েছেন।

মামলা পরিচালনায় পুলিশ বাধা সৃষ্টি করছে অভিযোগ করে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. রোকন উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পুলিশ বাধা সৃষ্টি করছে। বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আসামিদের পরিবারে ফোন করে বলছে চুপ থাকার জন্য, অন্যথায় প্রধান আসামি আব্দুল্লাহর বাবাকে মামলা দিয়ে হয়রানি করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ কোন ভাবে আমাদের সহযোগিতা করছে না। এমনকি মামলা পরিচালনা ও আসামিদের জামিন আবেদনের জন্য যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন তারা দিচ্ছে না। কিশোরীর ২২ ধারার জবানবন্দি শুধু দেখে নিজে পড়তে চেয়েছি সেই সহযোগিতাও করা হয়নি।’

পুলিশের দাবি তিন আসামি যে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন তা পূর্বের কোন ঘটনা ঘটিয়েছেন সেটি হতে পারে?- এ বিষয়ে আইনজীবী রোকন উদ্দিন বলেন, ‘এটি অসম্ভব। কারণ তদন্ত কর্মকর্তা রিমান্ডে নিয়েছেন কিশোরীর অপহরণের ঘটনায়। আর আসামিরা বর্ণনা দিয়েছেন কিশোরীর নাম উল্লেখ করেই। তারা যে বলবে অন্য মামলায় সেটি পুরোপুরি মিথ্যা।’

নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন,‘এ ধরনের কোন অভিযোগ আমি পাইনি। যদি কেউ অভিযোগ করে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এদিকে, দুপুরে সদর উপজেলার চাঁদমারী এলাকায় আদালত প্রাঙ্গণে কিশোরী ধর্ষণ ও হত্যার স্বীকারোক্তি দেয়া তিন আসামির নামে মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী।

এসময় আসামি আব্দুল্লাহর বাবা আজমত হোসেন বলেন, ‘কিশোরী জীবিত ফিরে এসেছে, তাহলে আমার ছেলে কেন মিথ্যা মামলায় কারাগারে থাকবে। অবিলম্বে আমার ছেলেসহ তিনজনের মুক্তি চাই। আর রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি নেওয়ায় ওসি ও এসআইয়ের বিচার চাই।’

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, আব্দুল্লাহর মা শিউলী বেগম, আসামি খলিলুর রহমানের স্ত্রী শারমিন আক্তারসহ অর্ধশতাধিক মানুষ।

Comments

The Daily Star  | English

Large-scale Chinese investment can be game changer for Bangladesh: Yunus

The daylong conference is jointly organised by Bangladesh Economic Zones Authority and Bangladesh Investment Development Authority

42m ago