ক্লাবের ইতিহাসের সেরার সঙ্গে বার্সার আচরণে ক্ষুব্ধ আরেক কিংবদন্তি

stoichkov_and_messi
ফাইল ছবি: এএফপি

বার্সেলোনার ইতিহাসের সেরা ফুটবলার কে? ফুটবলপ্রেমীদের কোনো দ্বিধা থাকার কথা নয়, নামটা লিওনেল মেসি। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের ঘোর নিন্দুকও এই রায়ে দ্বিমত করবেন না। কিন্তু নিয়তির কী নির্মম পরিহাস! মেসি ও বার্সা শব্দ দুটি পরিণত হয়েছিল একে অন্যের পরিপূরকে। অথচ তাদের মধুর সম্পর্কই এখন তেতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবিশ্বাস্য টানাপোড়েনে কাতালানদের কিংবদন্তি সাবেক স্ট্রাইকার রিস্টো স্টইচকভ বেজায় ক্ষুব্ধ। তিনি এতটাই ক্ষুব্ধ যে বলতে দ্বিধা করেননি- ক্লাবের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়ের অর্জন মুছে ফেলার চেষ্টায় লিপ্ত খোদ বার্সাই!

স্টইচকভ নিজে বুলগেরিয়ার সর্বকালের সেরা ফুটবলার বিবেচিত হয়ে থাকেন। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে তৎকালীন কোচ ইয়োহান ক্রুইফের ‘ড্রিম টিম’ খ্যাত বার্সেলোনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও ছিলেন তিনি। ১৯৯৪ সালে ব্যালন ডি’অর জেতা এই সাবেক তারকা মত প্রকাশে বরাবরই অসংকোচ।

২০ বছরের সম্পর্কের ইতি টেনে মেসির ন্যু ক্যাম্প ছাড়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আর্জেন্টাইন গণমাধ্যম ‘ওলে’র কাছে স্টইচকভ বলেছেন, ‘আমরা একজন কিংবদন্তিকে মুছে ফেলছি। আমরা বার্সেলোনার ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়কে বাজেভাবে বিদায় করে দিচ্ছি। আমরা তার নামে, তার কারিশমায় কালিমা লেপন করছি। (যেহেতু) আমি (বার্সার) একজন সদস্য, তাই আমি বলছি যে, আমরা তার গায়ে দাগ লাগাচ্ছি।’

অভিযোগের তীরটি তিনি সরাসরি নিক্ষেপ করেছেন বার্সা ও এর বর্তমান সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউয়ের দিকে, ‘আমি জানি না, যে খেলোয়াড়রা বার্সেলোনায় ইতিহাস তৈরি করে, তাদেরকে কেন সবসময় পিছনের দরজা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়। তারা আমাদেরকে বাধা মনে করে। কারণ, আমরা তাদের কাছ থেকে সভাপতি পদ কেড়ে নিতে চাই বা এমন কিছু! আমি জানি না তাদের (মনের ভেতরে) কী ঘটে।’

গেল কয়েক বছর ধরে কী দেখা যাচ্ছে? বার্সেলোনা গণমাধ্যমে এমন সব তথ্য সরবরাহ করে যাতে মেসিকে ক্লাবের সর্বেসর্বা বলে মনে হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার কাতালান চ্যানেল ‘টিভিথ্রি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেসির সঙ্গে বার্সার সম্পর্ক যেন আগামীতেও বজায় থাকে সেজন্য ক্লাবের সভাপতি পদ ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছেন বার্তোমেউ। তবে বিস্ময়কর ও চমকপ্রদ একটা শর্ত জুড়ে দিয়েছেন তিনি- যদি মেসি ‘প্রকাশ্যে’ বলেন যে, বার্সায় তার থাকার ক্ষেত্রে ‘মূল সমস্যা’ ক্লাবের সভাপতি, তবেই বার্তোমেউ দায়িত্ব থেকে সরে যাবেন! এমনটা ঘটলে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডই ক্লাব চালান বলে যারা সমালোচনা করে থাকেন, তারা যে হালে পানি পাবেন, সেটা আর আলাদা করে না বললেও চলে।

বার্সার বোর্ডের প্রতি যত ক্ষোভ রয়েছে, সব উগড়ে দিয়েছেন ৫৪ বছর বয়সী স্টইচকভ, ‘এই বোর্ড সবকিছু নষ্ট করে দিয়েছে। মনে হচ্ছে, তারা খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে ভক্তদের খেপিয়ে তুলতে চায়। আমি টানা চারটি লিগ (স্প্যানিশ লা লিগা) জিতেছি, ক্লাবের প্রথম ইউরোপিয়ান কাপও (১৯৯২ সালে)। ভক্তদের কাছ থেকে যে ভালবাসা পেয়েছি, তা শোধ করার কোনো উপায় আমার নেই। কিন্তু এই বোর্ড সাংবাদিকদের অর্থ প্রদান করে আগুনে ঘি ঢালার জন্য। ক্লাব হিসেবে এটা দুঃখজনক।’

মেসির কাছে বার্তোমেউ কতটা ঋণী, সেটাও মেক্সিকোর রেডিও স্টেশন ‘টিডিইউএন’কে দেওয়া বিবৃতিতে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন স্টইচকভ, ‘সান্দ্রো রাসেল পদত্যাগ করার পর বার্তোমেউ দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন এবং নির্বাচন দিতে তার এক বছর সময় লেগেছিল। কিন্তু আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, দায়িত্ব গ্রহণের তিন মাসের মধ্যে তাকে নতুন নির্বাচন আয়োজন করতে হতো। তিনি তা করেননি। কারণ, মেসি অনেক কিছুই (খুঁত) ঢেকে দিয়েছিল। এমনকি (বার্সার) বাস্কেটবল, হ্যান্ডবল দলেরও। কিন্তু এখন আমরা দেখছি যে, সভাপতি বাইরে এসে কথা বলছেন। কিন্তু তিনি কী নিয়ে কথা বলছেন তা অজানা।’

Comments

The Daily Star  | English

US tariff talks: First day ends without major decision

A high-level meeting between Bangladesh and the Office of the United States Trade Representative (USTR) ended in Washington, DC, yesterday without a major decision, despite the looming expiry of a 90-day negotiation window on July 9.

6h ago