চলে গেলেন বাংলাদেশের বন্ধু প্রণব মুখার্জি

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
প্রণব মুখার্জি। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।

১০ আগস্ট নয়াদিল্লিতে সরকারি বাসভবনের বাথরুমে পড়ে গিয়ে প্রণব মুখার্জি মাথায় আঘাত পান। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর এক পর্যায়ে কোমায় চলে যান তিনি। প্রায় দুই সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে আজ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন।

১৯৭১ সাল থেকেই বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন প্রণব মুখার্জি। তিনি বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য ছাত্র-শিক্ষক নিয়ে কলকাতা থেকে টাকা সংগ্রহ করতেন। সেখানকার ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে সাহায্য নিয়ে শরণার্থীদের জন্য বিভিন্ন ক্যাম্পে পাঠাতেন।

বাংলাদেশকে প্রবাসী সরকারকে ভারতের সমর্থন দানের জন্য ১৯৭১ সালের ১৫ জুন ভারতের রাজ্যসভায় প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন প্রণব মুখার্জি। তখন থেকেই তিনি বাংলাদেশের বন্ধু।

তিনি তার আত্মজীবনীমূলক সিরিজের প্রথমটি ‘দ্য ড্রামাটিক ডিকেড: দ্য ইন্দিরা গান্ধী ইয়ারস’ এ একটি পুরো অধ্যায় লিখেছেন ‘মুক্তিযুদ্ধ: দ্য মেকিং অব বাংলাদেশ’ শিরোনামে। এখানে প্রণব মুখার্জি পাকিস্তান আমলে বাঙালিদের প্রতি শোষণ ও বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরেছন। সেখানে তিনি ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা, সত্তরের নির্বাচন পেরিয়ে কী প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন এবং ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়েছিল সবকিছু নিয়ে লিখেছেন।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০১৩ সালে প্রণব মুখার্জির হাতে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। 

প্রণব মুখার্জির মৃত্যুতে ভারত সরকার সোমবার থেকে সাত দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।

শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইটে বলেছেন, ‘ভারতরত্ন শ্রী প্রণব মুখার্জির মৃত্যুতে সম্পূর্ণ ভারত শোক প্রকাশ করছে। তিনি আমাদের জাতীয় উন্নয়নের ধারায় অনন্য স্বাক্ষর রেখে গেছেন। একজন অসামান্য জ্ঞানী, একজন গৌরবময় রাষ্ট্রনায়ক, যিনি রাজনীতিতে সব সময় সম্মানিত এবং সমাজের সবার কাছে প্রশংসিত ছিলেন।’

দীর্ঘদিন কংগ্রেসের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও কেন্দ্রীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী থাকার পরে ২০১২ সালে তিনি ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। রাষ্ট্রপতি পদ ছাড়ার দুই বছর পর ২০১৯ সালে তাকে সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা— ‘ভারতরত্ন’ দেওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago