রংপুর বিভাগের ৫ জেলায় এক মাসে করোনা রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়েছে
রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। রংপুর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে রংপুরের আট জেলার পাঁচটিতে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
রংপুরের স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে এই আটটি জেলায় অন্তত ৪ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
গত ৩১ জুলাই পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ১৮৪। আজ ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এসব জেলায় ৫৮ হাজার ৭৪৫টি নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৬২৯ জন। এ ছাড়া, এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১৮১ জনে পৌঁছেছে। মৃতের সংখ্যা ৩১ জুলাই পর্যন্ত ছিল ১০৮, এবং ৩০ জুন পর্ন্ত ছিল ৪৯।
সুস্থতার হার গত এক মাসে দ্বিগুণ হয়েছে। ৩১ জুলাই পর্যন্ত কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ২০৭, এবং আজ ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সংখ্যা ৮ হাজার ৪০৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
জুলাই মাসের শেষে রংপুর জেলার করোনা পরিস্থিতি খুবই খারাপ ছিল। কিন্তু গত এক মাসে পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। ৩১ জুলাই রংপুরে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৬৯৫ জন। গত এক মাসে এই সংখ্যা ২ হাজার ৪৮৬ জনে পৌঁছেছে।
তথ্য অনুযায়ী, গত ৩১ দিনে আরও ৭৯১ জন রোগী আক্রান্ত হয়েছেন। যা অন্য জেলার চেয়ে অনেক কম।
কিন্তু ডিএইচএস রংপুর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে রংপুর বিভাগের আটটি জেলার মধ্যে পাঁচটির কোভিড পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এ জেলাগুলো হলো- দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়। গত এক মাসে এসব জেলার কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে।
৩১ জুলাই পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল দিনাজপুরে ১ হাজার ৬৩৭ জন, কুড়িগ্রামে ৪৮৩ জন, লালমনিরহাটে ৩৭৬ জন, ঠাকুরগাঁও ৩৬৯ জন এবং পঞ্চগড়ে ৩১৮ জন। এক মাস পর আজ বুধবার পর্যন্ত এ সংখ্যা যথাক্রমে ৩ হাজার ১৩৫, ৮১১, ৭২৬, ৯৭৮ এবং ৫৩০ এ পৌঁছেছে। এ ছাড়া, সর্বোচ্চ মৃত্যু এখন পর্যন্ত দিনাজপুরে।
তথ্য বলছে, গত এক মাসে দিনাজপুরে কোভিডে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ৩১ জুলাই পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিল ৩৬। কিন্তু, এক মাসে সংখ্যাটা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে ৬৩ হয়েছে।
অন্যদিকে, গত এক মাসে রংপুরে মাত্র আট জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ৩১ জুলাই রংপুরে মৃতের সংখ্যা ছিল ৩১, কিন্তু বুধবার পর্যন্ত এক মাস পর মৃত্যুর সংখ্যা ৩৯ জনে পৌঁছেছে।
এই বিভাগে প্রতিমাসে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ছে। মেতে পরীক্ষার সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৭০৪, জুনে ২৬ হাজার ৯০৪ জন, জুলাইতে ৪০ হাজার ১৯১ জন এবং আগস্টে ৫৮ হাজার ৭৪৫ জন। এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও রংপুর মেডিকেল কলেজের দুটি আরটি-পিসিআর ল্যাব সেটআপে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
দ্যা ডেইলি স্টারকে অনেকেই জানান, দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে সরকার যে স্বাস্থ্য নির্দেশিকা জারি করেছিল তা এখানে যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি। এ কারণে দিনাজপুর এবং অন্যান্য জেলায় রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
দিনাজপুরের কোভিড-১৯ সংক্রমণ সচেতনতা কমিটির সদস্য সম্পাদক রেজাউর রহমান রেজু বলেন, ‘জেলায় জেলায় এই নির্দেশিকা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘মাস্ক ব্যবহার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা বাজার, বিপনীবিতান, বাসগুলোতে পুরোপুরি মানা হচ্ছে না। যা আসলে এই সংক্রমণের হার বাড়িয়ে দিয়েছে।’
Comments