ক্লাব সভাপতি কথা রাখেননি: মেসি

ইচ্ছার বিরুদ্ধে আরেক মৌসুম বার্সায় থাকতে রাজি হওয়ার পর সমালোচনায় বিদ্ধ করেছেন ক্লাবটির সভাপতিকে।
lionel messi

বার্সেলোনা ছেড়ে চলে যেতে চান, ক্লাব সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউকে নাকি পুরো মৌসুম জুড়ে অনেকবারই জানিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। মৌসুম শেষে মেসি এই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন বলে তখন আশ্বস্ত করেছিলেন সভাপতি। কিন্তু রিলিজ ক্লজের ইস্যু সামনে এনে বার্তোমেউর বদলে যাওয়া অবস্থানে চরম হতাশ আর্জেন্টাইন তারকা। ইচ্ছার বিরুদ্ধে আরেক মৌসুম বার্সায় থাকতে রাজি হওয়ার পর সমালোচনায় বিদ্ধ করেছেন ক্লাবটির সভাপতিকে। 

গত ২৫ অগাস্ট এক ফ্যাক্স বার্তায় ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেন মেসি। এরপর থেকেই শুরু হয় নানান নাটক। ৭০০ মিলিয়ন রিলিজ ক্লজ ছাড়া মেসিকে ছাড়া হবে না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দেয় কাতালান ক্লাবটি। এরপর মেসির যাওয়া, না যাওয়া নিয়ে শুরু হয় দোলাচল।

১০ দিনের উত্তাপের পর শুক্রবার ফুটবল ওয়েবপোর্টাল গোলডটকমকে সাক্ষাতকারে মেসি জানিয়ে দেন, ইচ্ছার বিরুদ্ধেই থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি। তবে কথা দিয়েও তার যাওয়ার পথ বন্ধ করায় ক্লাবের সভাপতি বার্তোমেউর কড়া সমালোচনা করেছেন ছয় বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী ফুটবলার,  ‘আমি ক্লাবকে জানিয়েছে, সভাপতিকেও জানিয়েছি যে আমি চলে যেতে চাই। পুরো বছর ধরেই আমি এটা বলে আসছি। আমি মনে করেছি সরে যাওয়ার এটাই সময়।’

বার্সেলোনার অনেক সাফল্যের নায়ক মেসি ক্লাবটির পরিচালনা পর্ষদের নীতিতে হাঁপিয়ে উঠেছিলেন। খেলা কিংবা খেলার বাইরে তার সময়টা হয়ে উঠছিল বিষাক্ত। এখানেই পুরো ক্যারিয়ার শেষ করার ইচ্ছা থেকেও সরে আসতে মনকে বাধ্য করেছিলেন তিনি,  ‘আমি বিশ্বাস করেছিলাম ক্লাবের অনেক তরুণ খেলোয়াড় দরকার, নতুন খেলোয়াড় দরকার। আমি ভেবেছি বার্সেলোনায় আমার সময় শেষ। আমি খুব মর্মাহত ছিলাম কারণ আমি সব সময় বলে এসেছি এখানেই আমি আমার ক্যারিয়ার শেষ করতে চাই।’

‘খুব কঠিন বছর ছিল। অনুশীলনে আমি খুব ভুগেছি, ম্যাচে ভুগেছি, ড্রেসিং রুমেও ভুগেছি। সব কিছুই এখানে আমার কঠিন লাগছিল। এমন একটা সময় চলে আসে যখন আমি নতুন লক্ষ্যের কথা ভাবতে শুরু করে দেই। ’

কদিন আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৮-২ গোলে বিধ্বস্ত হয় বার্সা। ওই ম্যাচের পর মেসি হাল ছেড়ে দিয়েছেন বলে খবর চাউর হয়েছিল। তবে মেসি জানান, অনেক দিন থেকেই বার্সা ছাড়ার ভাবনা ঢুকে গিয়েছিল তার মাথায়,  ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে বিপর্যস্ত হওয়ার পর এই সিদ্ধান্তে আসিনি, না তা একদমই না। আমার ভেতর এরকম চিন্তা অনেক দিন থেকেই।’

কিন্তু নিজের সেই ইচ্ছা পূরণ করতে না পারায় কারণ হিসেবে ঘুরেফিরে একজনের দিকেই আঙুল এই ফুটবল জাদুকরের, ‘আমি প্রেসিডেন্টকে বলেছি। তিনি বলেছেন মৌসুমের শেষে আমি সিদ্ধান্ত নিতে পারব আমি থাকব না চলে যাব। কিন্তু তিনি তার কথা রাখেননি।’

‘পুরো বছর জুড়েই আমি প্রেসিডেন্টকে বলেছি যে আমি চলে যেতে চাই। যখন নতুন লক্ষ্য আর নতুন পথের দিকে যাওয়ার সময় তিনি আমাকে বলতে থাকলেন, “আমরা কথা বলব, এখন না , এটা তেমন কিছু না”। প্রেসিডেন্ট আসলে কি বলতে চাইছিলেন তার কোন আভাস আমাকে দেননি।’

মেসি জানান, তিনি ব্যুরোফ্যাক্স পাঠিয়েছিলেন কেবল আনুষ্ঠানিকতা সারতে, ক্লাবের বিপক্ষে দাঁড়াতে নয়। বার্তেমেউর সঙ্গেও মৌসুম শেষে চলে যাওয়ার কথা ঠিক করা ছিল তার, তখন বার্সা সভাপতি নাকি মেসিকে কোন তারিখ বেধে দেননি,  ‘এখন তারা বলছে আমি আগে বলিনি, কেন ১০ জুনের আগে জানাইনি? জুনের ১০ তারিখে আমরা করোনাভাইরাসের কারণে লা লিগার মাঝামাঝি পর্যায়ে ছিলাম এবং মহামারির কারণে মৌসুমটা পিছিয়ে গিয়েছিল।'’

‘সব কিছুর বাইরে প্রেসিডেন্ট আমাকে সব সময় বলেছেন, “যখন মৌসুম শেষ হবে, তুমি সিদ্ধান্ত নিবে থাকবে কিনা চলে যাবে।” তিনি কোন তারিখ বেধে দেননি। এটা শুধুই একটা আনুষ্ঠানিকতা ছিল যে আমি থাকতে চাই না। আমি ক্লাবের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামতে চাইনি।’

ক্ষোভ, কষ্ট আর হাহাকার মেশানো কণ্ঠে মেসি জানান, বার্সেলোনার ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করাই ছিল তার ধ্যানজ্ঞ্যান। কিন্তু ক্লাব পরিচালকদের নীতির কারণেই তিনি আর এখানে নতুন কোন স্বপ্ন দেখতে পারছিলেন না,  ‘অবশ্যই সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ছিল। বায়ার্ন ম্যাচের ফলের পর তা আসেনি। আমি সব সময় বলে এসেছি আমি এখানে থাকতে চাই, এখানেই ক্যারিয়ার শেষ করতে চাই। আমি ক্লাবের হয়ে শিরোপা জিততে চেয়েছি বরাবর। বার্সেলোনার ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করতে চেয়েছি।’

‘এবং সত্যটা হচ্ছে এখানে কোন স্বপ্ন নাই অনেকদিন থেকে। আমি সব সময় আমার পরিবার ও ক্লাবের কল্যাণ চিন্তা করি।’

Comments

The Daily Star  | English

Govt job seekers block Shahbagh with demand to raise age limit to 35yrs

Hundreds of job seekers today demonstrated at Dhaka's Shahbagh, blocking the intersection to press home their demand for raising the age limit for applying form government jobs from 30 to 35

2h ago