মসজিদে বিস্ফোরণ: সিঁড়ির নিচে গ্যাস লাইনের সন্ধান
নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার পশ্চিম তল্লা এলাকায় বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় মসজিদের সিঁড়ির নিচে গ্যাসের পাইপ লাইনের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে এই পাইপে লিকেজ আছে কিনা বলতে পারেনি খোঁড়াখুঁড়ির সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক ও তিতাসের কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার বিকেলে ৮ ফুট মাটি খুঁড়ে তিন ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ পাওয়া যায়। তিতাসের নিয়োজিত শ্রমিকেরা জানান, মসজিদের দুটি সিঁড়ি ভাঙতে হয়েছে। তারপর মাটি খুঁড়ে সিঁড়ির নিচেই পাওয়া গেছে লাইনটি। সম্পূর্ণ পাইপটি বের না করা পর্যন্ত লিকেজ আছে কিনা বলা যাচ্ছে না।
এর আগে সোমবার সকাল ৯টা থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় মাটির নিচে গ্যাসের সম্ভাব্য উৎস অনুসন্ধানে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এর তদন্ত কমিটি। মসজিদের বিভিন্ন দিকে ছয়টি গর্ত করে ত্রুটিপূর্ণ গ্যাসের পাইপলাইন পাওয়া যায়।
তিতাসের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ঢাকা অফিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্লানিং) আবদুল ওয়াহাব তালুকদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যে পাইপটির সন্ধান পাওয়া যায় তাতে দুটি লিকেজ দেখা গেছে।’
তিতাসের নারায়ণগঞ্জের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘মসজিদের সিঁড়ির নিচে পাইপ লাইন পাওয়া গেছে। লিকেজ আছে কিনা সম্পূর্ণ কাজ শেষ হওয়ার পর জানানো হবে।’
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ
এদিকে মসজিদের বিস্ফোরণের ঘটনায় পরদিন অবহেলা ও গাফিলতির অভিযোগে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেছে পুলিশ। এই মামলার তদন্তে এলাকাবাসীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। প্রথম দিন মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল গফফুর সহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গণমাধ্যমকে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে মসজিদটি নির্মাণের ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়নি। এতে মসজিদ কমিটির দায় এখানে আছে। তাদের বিরুদ্ধে অবহেলার প্রমাণ পেলে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা কাজ করছি। কারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। এ ঘটনায় যারা প্রকৃত ভাবে অবহেলা করেছে তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।’
উল্লেখ্য গত শুক্রবার রাত পৌনে ৯টায় বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণে ৪২ জন দগ্ধ হন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেলে পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ দুইজন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
Comments