মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধে জনদুর্ভোগ

নারায়ণগঞ্জের সদরের পশ্চিম তল্লা এলাকায় মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী। আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে খাবার এনে, হোটেল থেকে কিনে এবং খড়ির চুলায় রান্না করে খেতে হচ্ছে তাদের।
রান্নার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় কাঠ-খড়ির চুলা জ্বালিয়ে রান্না করতে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা এলাকার বাসিন্দাদের। ছবি: স্টার

নারায়ণগঞ্জের সদরের পশ্চিম তল্লা এলাকায় মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী। আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে খাবার এনে, হোটেল থেকে কিনে এবং খড়ির চুলায় রান্না করে খেতে হচ্ছে তাদের।

মঙ্গলবার পশ্চিম তল্লা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাটি ও টিনের চুলায় কাঠ, বাঁশ দিয়ে বহুতল আবাসিক ভবনের সিঁড়ি, বারান্দা ও আঙিনায় রান্না করছেন নারীরা। অনেকে বাইরে থেকে খাবার কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

মাটির চুলায় রান্না করা পারভীন আক্তার বলেন, ‘শনিবার সকাল থেকে গ্যাস নেই। তিন দিন বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে খেলাম। বাধ্য হয়ে আজ মাটির চুলা কিনে এনেছি। কিন্তু এলাকার রাস্তা বন্ধ। তাই জ্বালানি খড়ি আনতে পারিনি। ঘরের কিছু পুরাতন চেয়ার টেবিল ছিল এগুলো ভেঙে চুলায় দিচ্ছি। এভাবে কত দিন চলা যাবে?’

চার তলা ভবনের সিঁড়িতে বসে রান্না করছিলেন কোহিনূর বেগম। গিয়ে দেখা যায় সবজি, ডাল ও ভাত রান্না করছেন তিনি। তিনিও জ্বালানি খড়ির সংকটের কথা জানিয়ে বলেন, ‘এগুলো দিয়ে দুপুরে ও রাতে খাই। সকালে দোকান থেকে রুটি কিনে আনি। তাও চুলা জ্বালাই না। ধোঁয়ায় ঘর অন্ধকার হয়ে যায়।’বারান্দায় বসে রান্না করা রহিমা বেগম বলেন, ‘দুইদিন আত্মীয় স্বজন এসে খাবার দিয়ে গেছে। কিন্তু এখন রাস্তা বন্ধ করে খোঁড়াখুঁড়ি করছে যার জন্য খাবার নিয়েও আসতে পারছে না। তাই টিন কেটে কোন রকমে চুলা তৈরি করেছি। আর ঘরের পুরাতন চেয়ার, টেবিল ভেঙে কাঠ দিয়ে রান্না করছি।’

বিস্ফোরণে মারা যাওয়া কুদ্দুস ব্যাপারীর ছেলে সোহেল ব্যাপারী বলেন, ‘এ চারদিন ধরে আত্মীয় স্বজনরাই খাবার দিয়ে যাচ্ছেন। তাছাড়া এলাকার কয়েকজন দুই বেলা করে খাবার দিচ্ছেন। এ দিয়ে কোন রকম চলছে। কিন্তু আগামীকাল থেকে আর কেউ খাবার দিবে না। গ্যাস না দিলে তো বাইরে থেকে কিনে এনে খাবার খেতে হবে।’

এলাকাবাসী জানান, পশ্চিম তল্লা থেকে সবুজ বাগ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ২০ হাজারের বেশি পরিবারের বসবাস। এখানকার বেশির ভাগ বাসিন্দা মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত। তাদের সবার প্রতিদিন বাইরে থেকে খাবার কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড নারায়ণগঞ্জ অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে বিস্ফোরণের পর তিতাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় শনিবার ভোর থেকে পশ্চিম তল্লা এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। পাইপলাইনে লিকেজ অনুসন্ধানে সোমবার থেকে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়। এ কারণেই চার দিন ধরে এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

তিতাসের নারায়ণগঞ্জের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. মফিজুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘খোঁড়াখুঁড়ি শেষ হলেই গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। আশা করছি আগামীকালের মধ্যে খোঁড়াখুঁড়ি শেষ হয়ে যাবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

2h ago