বন্যাকবলিত এলাকায় আরও বেড়েছে খড়ের দাম, বিপাকে চাষিরা
লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি আঁটি খড় ছয় টাকা থেকে বেড়ে নয় থেকে ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় চাষিরা।
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে জোড়গাছ এলাকার খড় ব্যবসায়ী মজনু মিয়া জানান, হঠাৎ করেই খড়ের দাম বেড়ে গেছে। আমরাও বিভিন্ন জায়গা থেকে বেশি দামে খড় কিনে আনি। তাই বাধ্য হয়ে বেশি দামে খড় বিক্রি করছি।
ওই এলাকার আরেক ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, এক আঁটি খড় পরিবহনে খরচ হয় আট টাকা। বিক্রি করি নয় থেকে ১০। এক সপ্তাহ আগে আমরা প্রত্যেক আঁটি খড় ছয় থেকে সাত টাকা দরে বিক্রি করেছি।
চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র পাড়ের চর কালিকাপুরের কৃষক নাদের আলী বলেন, এবার বন্যায় কৃষকের ঘরের খড় সব নষ্ট হয়ে গেছে। এই সুযোগকে পুঁজি করে কিছু খড় ব্যবসায়ী উচ্চ মূল্যে খড় বিক্রি করছেন। রাতারাতি তারা খড়ের বাড়িয়ে দিচ্ছেন। একটি গরুকে প্রতি দিন গড়ে ছয় থেকে সাত আঁটি খড় খাওয়াতে হয়।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় চর পার্বতীর কৃষক আতিয়ার রহমান বলেন, দীর্ঘ মেয়াদি বন্যার কারণে ঘাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চারটি গরুর জন্য খড় সঞ্চয় করে রেখেছিলাম কিন্তু বন্যায় সব নষ্ট হয়ে গেছে। এখন বাজার থেকে উচ্চ মূল্যে খড় কিনে গরুকে খাওয়াতে হচ্ছে।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার তিস্তা নদীর চর কুটিরপাড় এলাকার কৃষক সফিয়ার রহমান বলেন, আমন ধান না কাটা পযর্ন্ত জমিতে নতুন ঘাস পাওয়া যাবে না। আরও প্রায় দুই মাস এভাবে খড় কিনে গরুকে খাওয়াতে হবে।
কুড়িগ্রাম প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবদুল হাই সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এবার বন্যায় ঘাসের জমি ও কৃষকের সঞ্চিত খড় ক্ষতি হয়েছে। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা উচ্চ মূল্যে খড় বিক্রি করছেন। আগামী দুই মাসের আগে জমিতে নতুন ঘাস হবে না। সরকারিভাবে কিছু খামারিকে গো খাদ্য সহায়তা করা হয়েছে। বাজারে খড়ের উচ্চ মূল্য হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্ষুদ্র চাষিরা।
Comments