হেফাজতে মৃত্যু: ৩ পুলিশ সদস্যের যাবজ্জীবন, ২ জনের ৭ বছরের কারাদণ্ড

ইশতিয়াক হোসেন জনি। ফাইল ছবি

রাজধানীর পল্লবী থানায় ২০১৪ সালে পুলিশের হেফাজতে ইশতিয়াক হোসেন জনির মৃত্যুতে দায়ের হওয়া মামলায় তিন পুলিশ সদস্যের যাবজ্জীবন এবং অপর দুই জনের সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-- রাজধানীর পল্লবী থানার সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান, সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক কামরুজ্জামান মিন্টু ও রাশেদুল ইসলাম এবং তাদের ইনফর্মার সুমন ও রাসেল।

আজ বুধবার দুপুরে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েস এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় পাঁচ আসামির মধ্যে তিন জন উপস্থিত ছিলেন।

আদালত তিন পুলিশ সদস্যের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেন, অন্যথায় তারা আরও ছয় মাস কারাদণ্ড ভোগ করবেন। এ ছাড়া অপর দুই আসামির প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে, অন্যথায় তারা আরও তিন মাস সাজা ভোগ করবেন।

পাশাপাশি আদালত মামলার বাদীকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দুই লাখ টাকা করে দিতে তিন পুলিশ সদস্যকে আদেশ দেন।

ক্ষতিপূরণের টাকা ১৪ দিনের মধ্যে না দিলে রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করতে পারবে না বলে আদালত রায় দেন।

পলাতকদের শাস্তি তাদের গ্রেপ্তার বা আত্মসমর্পণের দিন থেকে কার্যকর হবে।

নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ এর আওতায় এটিই প্রথম রায়।

পাঁচ আসামির মধ্যে তিন জনের উপস্থিতিতে দুপুর ২টার দিকে বিচারক কে এম ইমরুল কায়েস রায় পড়া শুরু করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে জাহিদ, রাশেদ ও সুমন কারাগারে আছেন। মিন্টু ও রাসেল পলাতক।

গত ২৪ আগস্ট যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারক কে এম ইমরুল কায়েস আজ রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।

এর আগে, আদালত মামলার বাদীসহ ২৩ সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

মামলার বিবৃতি অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি এসআই জাহিদসহ ২৫-২৬ জনের পুলিশের একটি দল পল্লবীর ইরানি ক্যাম্প এলাকায় একটি বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে জনিকে আটক করে।

ওই অনুষ্ঠানে এক নারীকে হয়রানির জন্য জনি সুমনকে চড় দিলে রাসেল, সুমন ও তাদের দুই বন্ধু পুলিশকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। পুলিশ জনিকে থানায় নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ করা হয়।

পরের দিন জনি অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাকে স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে, সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

২০১৪ সালের ৮ আগস্ট জনির ছোট ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি বাদী হয়ে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ ঘটনায় মামলা করেন।

২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম এস এম আশিকুর রহমান এ মামলার বিচারিক তদন্তে জনির মৃত্যুতে জাহিদ ও বাকি চার জনের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পেয়ে আদালতে বিচারিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

আদালত ওই পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১৭ অভিযোগ গঠন করেন।

আদালত কয়েকজন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ডের পর, আসামিরা নিম্ন আদালতে মামলার বিচার স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন।

পরে, গত বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রিট আবেদন খারিজ করে দিলে নিম্ন আদালতের এ মামলার বিচার আবার শুরু হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Cops gathering info on polls candidates

Based on the findings, law enforcers will assess security needs in each constituency and identify candidates who may pose risks.

14h ago