স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে কারাগারে সিনহা হত্যা মামলার ৪ আসামি
মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি চার পুলিশ সদস্যকে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে আসামি চার পুলিশ সদস্যকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আজ বুধবার বিকেলে দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘সিনহা হত্যা মামলার আসামি চার পুলিশ সদস্যদের জবানবন্দি শেষে বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে প্রিজনভ্যানে করে আদালত থেকে জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সিনহা হত্যা মামলায় এই চার পুলিশ সদস্য তাদের দোষ স্বীকার করে আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।’
এর আগে, আজ সকাল ১১টায় জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত কক্সবাজার সদর-৪-এর বিচারক তামান্না ফারাহ’র আদালতে এ চার আসামিকে হাজির করা হয়। এই চার জন হলেন- এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে।
তখন তদন্তকারী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘সিনহা হত্যা মামলার আসামি চার পুলিশ সদস্যের দ্বিতীয় দফা রিমান্ড শেষে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিতে আদালতে হাজির করা হয়। বিচারকের খাস কামরায় তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া শুরু হয়। আদালতে হাজির করার পর প্রথমে সোয়া ১১টায় এএসআই লিটন মিয়া ও আব্দুল্লাহ আল-মামুনের জবানবন্দি নেওয়া শুরু হয়। এর আধা-ঘণ্টা পর কনস্টেবল কামাল হোসেন ও কনস্টেবল সাফানুর করিমের জবানবন্দি নিতে খাস কামরায় হাজির করা হয়।’
মামলার আসামিদের মধ্যে প্রথম দফায় তিন আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ান সদস্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। দ্বিতীয় দফায় মামলার প্রধান আসামি বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও উপপরিদর্শক নন্দ দুলাল রক্ষিত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আদালতে।
টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দীন ও আয়াছ উদ্দীনও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত ৬ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফায় এই চার আসামিকে চার দিনের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়। ২৪ আগস্ট আদালত তাদের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
গত ১২ আগস্ট আদালত এই হত্যা মামলার আসামি এই চার পুলিশ সদস্যকে প্রথম দফায় সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। প্রথম দফায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১৪ আগস্ট তাদের র্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে গত ২০ আগস্ট তাদের আদালতে হাজির করা হয়।
গত ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মেরীন ড্রাইভ সড়কে এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় ৫ আগস্ট সিনহার বড় বোন শাহরিয়ার শারমিন ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয় পুলিশ সদস্যকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরদিন ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
আরও পড়ুন:
সিনহা হত্যা মামলার ৮ আসামি আদালতে, প্রদীপ দাশকে নেওয়া হচ্ছে কক্সবাজার
সিনহা হত্যা মামলায় এপিবিএনের ৩ সদস্য রিমান্ডে
রিমান্ড শেষে সিনহা হত্যা মামলার ৭ আসামি কারাগারে
সিনহা হত্যা মামলা: প্রদীপ-লিয়াকতসহ ৩ আসামি রিমান্ডে
Comments