জাপানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ৩ প্রার্থীর মধ্যে

স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজে আবের স্বেচ্ছায় পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ায় ক্ষমতাসীন দল লিবারাল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধানের পদও শূন্য হয়ে যায়।
ইয়োশিহিদে সুগা, ফুমিও কিশিদা, শিগেরু ইশিবাও। ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজে আবের স্বেচ্ছায় পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ায় ক্ষমতাসীন দল লিবারাল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধানের পদও শূন্য হয়ে যায়।

আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের পরবর্তী প্রধান নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা আছে। জাপানের নিয়ম অনুযায়ী সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের প্রধানই হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।

ইতোমধ্যে তিন প্রার্থী দলীয় প্রধান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন। এদের একজন  শিনজে  আবের কাছের মানুষ মন্ত্রীসভার চিফ কেবিনেট সেক্রেটারি ইয়োশিহিদে সুগা। আরেকজন সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং আবের সমালোচক শিগেরু ইশিবা, তৃতীয়জন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমানে এলডিপি’র নীতি নির্ধারক প্রধান ফুমিও কিশিদা।

ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্যে সুগা তার অবস্থান অনেকটাই সংহত করতে সক্ষম হয়েছেন। সুগা বলেছেন, দলের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলে আমার পূর্বসূরি আবের গৃহীত  কর্মসূচীর ধারাবাহিকতা রক্ষা করবো। 

‘প্রধানমন্ত্রী আবের কাজকে আমি চালিয়ে যাব এবং আশা করছি এগুলোকে সামনে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে,’ বলেন সুগা।

সুগা ইতোমধ্যে এলডিপির ৭টি বৃহৎ গ্রুপের পাঁচটিরই সমর্থন আদায়ে সক্ষম হয়েছেন। এরা হচ্ছেন প্রাক্তন সেক্রেটারি জেনারেল হিরোয়ুকি হোসোদা, ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী তারো আসো, পরিবেশ মন্ত্রী নোবুতেরু ইশিহারা, প্রাক্তন জেনারেল কাউন্সিল চেয়ারম্যান ওয়াতারু তাকেশিতা এবং বর্তমান সেক্রেটারি জেনারেল তোশিহিরো নিকাই। এলডিপির প্রথম সারির আইন প্রণেতাদের মোট ৩৯৪ ভোটের মধ্যে তাদের সঙ্গে ২৬৪ জন আছেন।

এ ছাড়া, সুগার নিজের সমর্থক হিসেবে ৩০ জন আইন প্রণেতা আছেন। এই ভোটগুলো সুগা পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দীর্ঘদিন চিফ কেবিনেট সেক্রেটারি পদে থাকায় মিডিয়ায় সুগার শক্ত অবস্থান গড়ে উঠেছে যা সুগার জন্য বাড়তি সুবিধা।

অপরদিকে আবের নীতিমালার পরিবর্তন চান ইশিবা। তিনি জানান, তার প্রথম কাজ হবে জাপানকে আবার নতুন করে তৈরি করা এবং এজন্য ‘নতুন পরিকল্পনা প্রস্তুত করা’। এ ছাড়া, পরবর্তী যুগের জন্যে দেশ টিকতে পারবে না বলে মনে করেন তিনি। 

ইশিবা বলেন, তিনি টোকিও-কেন্দ্রিক অর্থনীতিকে বিকেন্দ্রীকরণ করবেন এবং একটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা চালু করবেন। দুর্যোগ প্রবণ দেশটি একটি সমন্বিত প্রতিক্রিয়া পদ্ধতি চালু করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

দলীয় সংসদ সদস্যদের মধ্যে ইশিবার সমর্থন আছে। কারণ, দীর্ঘদিন (প্রায় ৯ বছর) আবে ক্ষমতায় থাকায় একদিকে যেমন আবের সরব সমর্থন আছেন, তেমনি নীরব বিরোধী মতও গড়ে উঠেছে। আর এই বিরোধী গোষ্ঠী ইশিবাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে কিশিদা বলেন, রাজনীতি জনগণের জন্য। রাজনীতিতে জনগণের নাড়ীর স্পন্দন বুঝতে হবে। আর আমার বিশ্বাস সেই স্পন্দন আমি বুঝতে সক্ষম। তাই আমি প্রধান নির্বাচিত হতে পারলে জনগণের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবো। আর এটাই জাপানি জনগণের প্রত্যাশা।

দলীয় প্রধান পদে নির্বাচন জমে উঠেছে। প্রতিদিনই একাধিক সভা করে দলীয় সংসদদের কাছে টানার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। 

এই তিন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে শিগেরু ইশিবা এবং ইয়োশিহিদে সুগার মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচিত সভাপতি ১৬ সেপ্টেম্বর বুধবার আবের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

[email protected]

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago