করোনায় মারা গেলেন অভিনেতা সাদেক বাচ্চু

সাদেক বাচ্চু। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় খল অভিনেতা এবং মঞ্চ ও টেলিভিশনের পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ের গুণী অভিনেতা সাদেক বাচ্চু (৬৫)। রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সোমবার বেলা ১২টা ৫ মিনিটে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

সাদেক বাচ্চুর মৃত্যু বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন তার স্ত্রী শাহানা এবং সহকারী পরিচালক মাসুদ রানা।

জানা গেছে, এই অভিনেতা প্রথমে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নমুনা পরীক্ষার পর ১১ সেপ্টেম্বর তার করোনা শনাক্ত হয়। পরে তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সাল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই আজ তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

অভিনেতা সাদেক বাচ্চুর আসল নাম মাহবুব আহমেদ সাদেক। দেশের বাড়ি চাঁদপুরে হলেও জন্ম ঢাকায়। সিনেমার কিংবদন্তি পরিচালক এহতেশামের ‘চাঁদনী’ চলচ্চিত্রে তার নাম বদলে সাদেক বাচ্চু রাখা হয়। তখন থেকেই  এ নামে পরিচিত তিনি।

১৯৬৩ সালে খেলাঘরের মাধ্যমে রেডিওতে অভিনয় শুরু করেন সাদেক বাচ্চু। একইসঙ্গে মঞ্চেও বিচরণ করেন। প্রথম থিয়েটার ‘গণনাট্য পরিষদ’। ১৯৭২-৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে যখন এদেশের সাংস্কৃতিক বলয় নতুনভাবে তৈরি হচ্ছিল, তখন যোগ দেন গ্রুপ থিয়েটারের সঙ্গে। দীর্ঘ পথ পেরিয়ে ১৯৭৪ সালে প্রথম টেলিভিশন নাটকে অভিষিক্ত হন।

টেলিভিশনে প্রথম নাটক ছিল ‘প্রথম অঙ্গীকার’। নাটকটি পরিচালনা করেন আবুল্লাহ ইউসুফ ইমাম। এ ছাড়াও, সোজন বাদিয়ার ঘাট, নকশী কাঁথার মাঠসহ অসংখ্য নাটকে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন।

‘রামের সুমতি’ নামের একটি সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেন। আর খলনায়ক হিসেবে প্রথম অভিনয় করেন শহীদুল হক খান পরিচালিত ‘সুখের সন্ধানে’ সিনেমায়। খল চরিত্রেই বেশি কাজ করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। সিনেমা ছাড়াও মঞ্চ, বেতার, টেলিভিশনেও অনেক নাটক করেছেন।

৫০ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ার তার। শুরুতে মঞ্চ নাটকে অভিনয় করতেন। মতিঝিল থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। এই দলের সভাপতিও তিনিই। বেতারে একটা সময়ে প্রচুর নাটক করেছেন। বেতারের খেলাঘর তার আলোচিত একটি নাটক।

২০১৮ সালে অভিনেতা আলমগীর পরিচালিত ‘একটি সিনেমার গল্প’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি লেখালেখির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। এ ছাড়াও, দীর্ঘদিন তিনি বাংলাদেশ ডাক বিভাগে চাকরি করেছেন।

তার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সিনেমা হচ্ছে— জীবন নদীর তীরে, কোটি টাকার কাবিন, পিতা মাতার আমানত, সুজন সখী, মায়ের চোখ, আমার প্রাণের স্বামী, ভালোবাসা জিন্দাবাদ, বধূবরণ, মায়ের হাতে বেহেস্তের চাবি, লোভে পাপ পাপে মৃ্ত্যু, মন বসে না পড়ার টেবিলে প্রভৃতি।

Comments

The Daily Star  | English

Diplomatic push loses steam

Iran says European proposals ‘unrealistic’; Trump says Europe’s diplomacy unlikely to yield results

6h ago