শিক্ষককে কান ধরিয়ে ওঠবস, ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

বরিশাল
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

বরিশালে এক নার্সিং শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে তার প্রাক্তন শিক্ষককে মারধরের পর কানধরে ওঠবস করানোর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হলে এনিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকে।

জানা যায়, নগরীর রুপাতলীতে অবস্থিত একটি বেসরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা করতেন ওই শিক্ষক।

তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ঘটনার পর তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। ২০১৮ ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করার সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে তার বিরোধ হয়। এর মধ্যে ইমতিয়াজ ইমন নামের এক শিক্ষার্থী ও তার স্ত্রী মনিরা আক্তার ক্লাস না করেও বেশি নম্বর দিতে চাপ দেন।

ঘটনার বিষয়ে ওই শিক্ষকের ভাষ্য, ‘২৫ আগস্ট দুপুরে আমি নগরের চৌমাথা দিয়ে যাচ্ছিলাম। সেখানে রাস্তায় ইমন ও তার ৬/৭ জন বন্ধু আড্ডা দিচ্ছিল। তারা আমার পথ রোধ করেন। কথা আছে বলে তারা আমাকে পাশের নির্জন স্থানে যেতে বলেন। আমি যেতে চাইনি। তখন তারা আমাকে জোর করে অক্সফোর্ড মিশন রোড এলাকায় নিয়ে যান। একটি দোকানে বসিয়ে তারা আমাকে নানাভাবে অপমান ও মারধর করেন। পরে জোর করে গোরস্থান রোডের নির্জন স্থানে নিয়ে যান। আবার আমাকে মারধর করেন। মারধরের একপর্যায়ে ইমন আমাকে কান ধরে ওঠবস করতে বাধ্য করেন।আমাকে দিয়ে ‘ক্লাসে মেয়েদের ডিস্টার্ব করি, ভবিষ্যতে আর করব না’—এমন কথা বলিয়ে নেয়। একজন এগুলো মুঠোফোনে ধারণ করেন। ইমন তখন তার স্ত্রীকে সেখানে ডেকে আনেন। ক্ষমা চাইতে বলেন। ভয়ে তখন বাধ্য হয়ে আমি ইমনের স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাই।’

ঘটনার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ইমতিয়াজ ইমন বলেন, ‘ওই শিক্ষক বিভিন্ন সময়ে নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। প্রতিবাদ করায় তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। তার কারণে আমার স্ত্রী এখনও পাস করতে পারেননি। আমি এই কথা তাকে জিজ্ঞেস করেছি।  তাকে কোন মারধর করা হয়নি। তবে নিজে থেকেই সে ঘটনা স্বীকার করে কান ধরে ওঠবস করেন।’

অভিযুক্ত যুবক দাবি করেন তিনি ফেসবুকে এই ভিডিও প্রকাশ করেননি, কে করেছেন জানেন না। 

নার্সিং কলেজটির পরিচালক সাজ্জাদুল হক বলেন, 'ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি আমি দেখেছি। ভিডিওতে যে শিক্ষককে দেখা গেছে তিনি আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে দুই বছর আগে চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। তবে করোনাকালে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে অনলাইনে ক্লাস নিয়েছেন। তবে এই ঘটনা কোন পক্ষই আমাকে জানায়নি। তার বিরুদ্ধে কোন অশালীন অভিযোগ কোন শিক্ষার্থী আমাকে করেনি।'

এদিকে এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির বরিশাল আঞ্চলিক শাখার সভপাতি দাশগুপ্ত আশীষ কুমার।

তিনি বলেন, 'অবিলম্বে ওই নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই। কোনো শিক্ষক অপদস্ত হবেন এটা মেনে নেয়া যায় না।'

পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, আমরা এই বিষয়টি অবগত নই ভিকটিম অথবা তার পক্ষে যে কেউ এই বিষয়ে অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি।

Comments

The Daily Star  | English
US wants Bangladesh trade plan,

Bangladesh to push for tariff cuts in USTR talks in Washington today

Bangladesh has been engaged in negotiations to sign a tariff agreement with the US

39m ago