দুর্গাপূজা: বেড়েছে প্রতিমা তৈরির খরচ
খড় ও সুতলির দাম বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে প্রতিমা তৈরির খরচ। গত বছরের তুলনায় এবার দুর্গা প্রতিমা তৈরি করতে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত বেশি খরচ হচ্ছে। লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের প্রতিমা শিল্পীরা জানিয়েছেন, ক্রেতারা আগের দামেই প্রতিমা কিনছেন। ফলে তাদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।
এই দুই জেলায় প্রায় এক শ প্রতিমা শিল্পী আছেন। পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, লালমনিরহাটে ৩৯৭টি ও কুড়িগ্রামে ৫৩১টি মণ্ডপে এ বছর দূর্গাপূজার আয়োজন হবে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বৈদ্যেরবাজার এলাকার প্রতিমা শিল্পী তপন চন্দ্র মালাকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির অজুহাত দেখিয়ে মন্দির কমিটির লোকজন প্রতিমার দাম কম বলছে কিন্তু এবার প্রতিমা তৈরিতে খরচ বেশি হয়েছে। গত বছর এক আঁটি খড় কিনেছি তিন থেকে চার টাকায়। এবার সেই খড়ের আঁটি কিনতে হচ্ছে ১১ থেকে ১২ টাকায়। প্রতিকেজি সুতলিতে দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এবার প্রতিমা তৈরি করে লাভ করতে পারবো না।’
একই এলাকার প্রতিমা শিল্পী বেবী রানী মালাকার বলেন, ‘গেল বছরগুলোতে প্রতিটি দুর্গা প্রতিমা ১০ থেকে ২৫ হাজার টাকায় তৈরি করে ১৮ থেকে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। এ বছর প্রতিটি দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে খরচ হচ্ছে ১৪ থেকে ৩০ হাজার টাকা আর বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ৩২ হাজার টাকায়। করোনা পরিস্থিতির কারণে মন্দির কমিটি কোনো রকমে পূজা করতে চাচ্ছে, সেই কারণে প্রতিমা কিনতে দর কষাকষি করছে।’
লালমনিরহাট সদর উপজেলার নবীনটারী গ্রামের প্রতিমা শিল্পী পল্লব চন্দ্র রায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে আমরা পাঁচ জনের মিলে প্রায় ২০টি দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছিলাম। এবার করছি সাতটি। গেল বছরের তুলনায় দাম কম, চাহিদাও কমেছে।’
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা গ্রামে মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনিল চন্দ্র রায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার দুর্গাপূজা অনাড়ম্বরভাবে অনুষ্ঠিত হবে। দর্শনার্থীর সংখ্যাও থাকবে খুবই কম। পূজা করতে হবে তাই কম দামে দুর্গা প্রতিমা কিনে খরচ কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’
লালমনিরহাট পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি হিরালাল বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার দুর্গাপূজায় লাইটিং, ডেকোরেশন থেকে বিরত থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা পরিচালনা করতে হবে। অনেক স্থানে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত নাও হতে পারে।’
Comments