মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বর জালিয়াতি চক্রের ১২ সদস্য গ্রেপ্তার

মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করার ডিভাইস ও চোরাই মুঠোফোনসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্রের ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল বুধবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর জালিয়াতি চক্রের সদস্যরা।

মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করার ডিভাইস ও চোরাই মুঠোফোনসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্রের ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল বুধবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন সিআইডি’র অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) শেখ মোহাম্মদ রেজাউল হায়দার।

সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, কতিপয় সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ ঢাকা মহানগর এলাকায় মুঠোফোন চোর চক্রের কাছ থেকে স্বল্প দামে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মুঠোফৈান কিনে আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করার ডিভাইস ব্যবহার করে সমাজের ক্ষতি করে আসছে। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন অপরাধীরা হত্যাসহ ছিনতাই, ডাকাতি করে ব্যবহারকারীর মুঠোফোন নিয়ে যাওয়ার কারণে পূর্বে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহজেই অপরাধীদের শনাক্ত করতে পারত। কিন্তু, সংঘবদ্ধ চক্রটি মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করার কারণে চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটনসহ প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিআইডির (ঢাকা মহানগর, পূর্ব) একটি দল চোরাই মুঠোফোন কিনে বিভিন্ন ডিভাইস ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে মার্কেটে বিক্রি করা সংঘবদ্ধ চক্রের ১২ সদস্যদের গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার ১২ জন হলেন— মুরাদ খান (২৩), লাভলু হাসান (২০), আল আমিন ওরফে অনিক (২২), মো. বশির আলম শুভ (৩০), মো. আ. মালেক (৩২), তামিম (২০), মো. শাহ আলম (৩৬), স্বপন (৩৪), মো. জাহাঙ্গীর আলম (২৬), মো. ইমাম হাসান (২২), মো. আরিফ (৩৪) ও মো. আল আমিন (২০)।

সূত্র আরও জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ১২ জন জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, আসামি মুরাদ ও লাভলু শহরের বিভিন্ন চোরদের কাছ থেকে চোরাই মুঠোফোন কিনে নিয়ে তার লক খোলা ও আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করার জন্য অনিক, শুভ ও মালেকের কাছে দিতেন। অনিক, শুভ ও মালেক জেড৩এক্স ডিভাইস ব্যবহার করে মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করত। এরপর তারা সুনির্দিষ্ট গ্রাহকের কাছে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে মুঠোফোনগুলো বিক্রি করত। গ্রেপ্তার আলামিনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মিম টেলিকমের মালিক মালেকের কাছ থেকে চোরাই মুঠোফোনসহ আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করার ডিভাইস উদ্ধার করা হয় এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ চোরাই মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়।

সিআইডি জানিয়েছে, আসামিরা সবাই একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রায় ২৬৫টি চোরাই মুঠোফোন, নয়টি জেড৩এক্স ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। চক্রের সদস্যরা এই ডিভাইসগুলো গুলিস্থানের পাতাল মার্কেটের মাসুদ টেলিকম ও কবির টেলিকম থেকে কিনেছে বলে জানিয়েছে। মাসুদ ও কবির টেলিকম অবৈধভাবে ডিভাইসগুলো বাংলাদেশে নিয়ে আসে। আসামিদের কাছে থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে এই চক্রের আরও সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলমান রয়েছে।

Comments