সাবেক কাউন্সিলর নোবেলের সোয়া ২১ কোটি টাকা জব্দ করেছে দুদক

কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর জাবেদ মো. কায়সার নোবেলের তৃতীয় দফায় আরও ৪২ লাখ টাকা জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ নিয়ে তিন দফায় নোবেলের মোট ২১ কোটি ২২ লাখ টাকা এবং চারটি ফ্লাট জব্দ করলো দুদক।
আজ বৃহস্পতিবার দুদক চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বিত কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দীন দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেডের কক্সবাজার শাখায় নোবেলের অ্যাকাউন্টে ওই ৪২ লাখ টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। তৃতীয় দফায় আজ ওই ৪২ লাখ টাকা জব্দ করা হলো। ’
এর আগে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার জেলা ডাকঘরে নোবেলের নামে সঞ্চয়ী হিসাবে থাকা ৮০ লাখ টাকা জব্দ করেছিল দুদকের একই অনুসন্ধান দল। গত ১ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার শহরে অবস্থিত চারটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে তার নামে জমা থাকা ২০ কোটি টাকা জব্দ করেছিল দুদক।
এলাকাবাসী জানায়, সাবেক কাউন্সিলর জাবেদ মো. কায়সার নোবেল এলাকায় সুদের কারবারি হিসেবে পরিচিত। ছয় মাস আগে দাবীকৃত উচ্চহারের সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তিনি আলম মান্নান নামের এক প্রবাসীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। ওই প্রবাসী তখন স্ট্রোকে আত্রুান্ত হন। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
দুদক সূত্র জানায়, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত একটি মামলার সূত্র ধরে জাবেদ মো. কায়সার নোবেলসহ আরও ১০ জনের ব্যাংক ও সঞ্চয়ী হিসাব অনুসন্ধান করেছে দুদকে। অনুসন্ধানে জাবেদ কায়সার নোবেলের নামে বেসিক ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক এবং ট্রাস্ট ব্যাংক কক্সবাজার শাখায় ২০ কোটি টাকা জমার সন্ধান পাওয়া যায়। গত ১ সেপ্টেম্বর ওই ২০ কোটি টাকা জব্দ করা হয়। দ্বিতীয় দফায় ১৩ সেপ্টম্বর কক্সবাজার ডাকঘরে জমা রাখা ৮০ লাখ টাকা জব্দ করা হয়। তৃতীয় দফায় আজ ইউনিয়ন ব্যাংকে থাকা ৪২ লাখ টাকা জব্দ করা হলো।
এ ছাড়া, ১৫ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার শহরের কলাতলী সড়কের তিনটি হোটেলে নোবেলের নামে থাকা চারটি স্টুডিও ফ্ল্যাট জব্দ করে দুদক। অবৈধ উপায়ে অর্জিত তার আরও সম্পদ আছে কিনা তা বের করতে অনুসন্ধান অব্যাহত আছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কথিত মধ্যস্থতার (দালালি) মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের কাছ থেকে এসব কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাই নোবেলের নামে থাকা এসব ব্যাংক ও ডাকঘরের হিসাবে রক্ষিত টাকা জব্দ দেখানো হয়েছে।
জাবেদ মো. কায়সার নোবেল আত্মগোপনে থাকায় এবং তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
Comments