বরফের দাম বাড়ায় ক্ষোভ, কক্সবাজারে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ বেচা-কেনা বন্ধ

কক্সবাজারে বরফ কল মালিকেরা বরফের দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন মাছ ব্যবসায়ী ও মাছ ধরার ট্রলার মালিকেরা। প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার জেলায় মাছের সবচেয়ে বড় মোকাম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ বেচা-কেনা বন্ধ ছিল।
বরফকল মালিকেরা বরফের দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে বিক্ষোভ সমাবেশ করে মৎস্য ব্যবসায়ী ও মাছ ধরার ট্রলার মালিকেরা। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারে বরফ কল মালিকেরা বরফের দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন মাছ ব্যবসায়ী ও মাছ ধরার ট্রলার মালিকেরা। প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার জেলায় মাছের সবচেয়ে বড় মোকাম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ বেচা-কেনা বন্ধ ছিল।

এছাড়াও সকাল ১০টা থেকে দুই ঘণ্টা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কক্সবাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতি ও কক্সবাজার মৎস্য ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করে।

সংবাদ সম্মেলনে মৎস্য খাতের প্রধান তিন সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেন, কক্সবাজারের বরফ কল মালিকদের গড়া সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে ফিশিংবোট মালিক ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। ঠিক সময়ে চাহিদা মতো বরফের সরবরাহ ও যোগান না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮০ শতাংশ মাছ ব্যবসায়ী ও বোট মালিক।

কক্সবাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম চিশতি বলেন, কক্সবাজারের বরফ কল মালিকেরা সিন্ডিকেট করেছে। তারা স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীদের বরফ বিক্রি না করে কয়েকগুণ বেশি দামে বাইরে বিক্রি করে দিচ্ছে। এতে কয়েক হাজার মৎস্য ব্যবসায়ী ও বোট মালিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। 

মৎস্য ব্যবসায়ী শফিউল আলম বাশি বলেন, মাছের ব্যবসায় কয়েক বছরের তুলনায় খরচ বেড়েছে ৩ থেকে ৪ গুণের বেশি। সময় ও চাহিদা মতো বরফ না পেয়ে লাখ লাখ টাকার মাছ নষ্ট হচ্ছে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন আড়ত ও বাজারে মাছের চালান পাঠানো যাচ্ছে না। দেউলিয়া হওয়ার পথে অনেক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।

জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘১৫০ টাকার বরফ ৫০০ টাকায় কিনতে বাধ্য করা হয়। বরফের ঘাটতি পূরণে বাইর থেকে আনতে গেলেও বাধা দেয়া হয়। স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত বরফ আকারে বড় হলেও ভেতরে পুরো ফাঁকা। ১২০ কেজি ওজনের বরফ ৩০ কেজিও হয় না।’

তিনি বলেন, বাধ্য হয়ে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, চাঁদপুর, খুলনা, মহিপুর থেকে বরফ কিনে আনছেন মাছ ব্যবসায়ীরা।

বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে ব্যবসায়ী ও বোট মালিকেরা বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক  মো. জাহিদুল ইসলামের সাথে দেখা করেন।

জাহিদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি সমস্যা সমাধানের জন্য। কিন্তু উভয় পক্ষ এখনও অনড় অবস্থানে রয়েছে। কাউকে কেউ ছাড় দিতে রাজি না। দুপক্ষই বর্তমানে সাংঘর্ষিক অবস্থায় রয়েছে। আজ অবতরণ কেন্দ্রে মাছ ওঠা-নামা এবং বেচাবিক্রি বন্ধ ছিল। এতে সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।'

তিনি জানান, মৎস্য অবতরন কেন্দ্রে প্রতিদিন সর্বনিম্ন আড়াই থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়।

এদিকে, কক্সবাজার বরফ মিল মালিক সমিতির সভাপতি মাশেদুল হক রাশেদ সিন্ডিকেট করে বরফের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ এর দাম বৃদ্ধিসহ বরফের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। তাই সংগত কারণে বরফের দামও স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে।

সূত্র মতে, কক্সবাজারে ১৭ টির মতো বরফকল আছে। যেখানে ২০ থেকে ২৪ কেজি ওজনের ১২০০ পিস মতো বরফ উৎপাদন হয়। ভরা মৌসুমে কক্সবাজারে ২ হাজার পিস বরফের চাহিদা রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago