ভারতকে প্যাংগং সো’তে ব্যস্ত রেখে দেপসাং নিয়ন্ত্রণে নিতে চায় চীন?

দেপসাং অঞ্চল। ছবি: সংগৃহীত

গত এপ্রিলের পর থেকে লাদাখে ভারত-চীন সীমান্তে বিতর্কিত দেপসাং অঞ্চলে সবগুলো ভারতীয় টহলকে বাধা দিয়েছে চীনা সেনারা। তা সত্ত্বেও সংসদে দেওয়া বিশদ বিবরণীতে দেপসাং অঞ্চলে বিষয়ে কিছু উল্লেখ করেননি দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। দেপসাং অঞ্চলে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশেরই ব্যাপক সেনা মোতায়েন রয়েছে।

আজ শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিরক্ষা বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, দেপসাং নিয়ে দুই দেশের ‘পুরনো ও দীর্ঘকালীন সমস্যা’ আছে। এ বছর প্যাংগং সো-চুষল, গোগড়া-হটস্প্রিংস ও গ্যালওয়ান ভ্যালি অঞ্চলের বিবাদের সঙ্গে এটিকে ‘সমান ভাবা বা

যোগসূত্র’ আছে বলে ধরে নেওয়া উচিত হবে না।

তিনি বলেন, ‘দেপসাংয়ে এখন সামরিক অবস্থান নেই। সেখানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) নিয়ে দুই দেশেরই দাবি রয়েছে। সেখানে নতুন করে কোনো উত্তেজনা তৈরি হয়নি।’

চীন লাদাখ সীমান্তের প্যাংগং সো-চুষল ও অন্যান্য অঞ্চলে আক্রমণাত্মক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ভারতের মনোযোগ গুরুত্বপূর্ণ দেপসাং অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিতে পারে বলে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

গত পাঁচ মাস ধরে দেপসাং সীমান্তে ভারতীয় সেনাদের ঐতিহ্যবাহী টহল পয়েন্ট ১০, ১১, ১১এ, ১২ ও ১৩-তে সক্রিয়ভাবে বাধা দিচ্ছে চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)।

পিএলএ সেনারা দেপসাংয়ের ‘বটলনেক’ বা ‘ওয়াই-জংশন’ এলাকার কাছে ঘাঁটি গড়েছে। যার অবস্থান ভারতের দাবি করা ভূখণ্ডের প্রায় ১৮ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে। যখনই কোনো ভারতীয় টহল সেখানে গিয়েছে, তখনই তারা বাধা দিয়েছে।

চীন ওই অঞ্চলের ৯৭২ বর্গকিলোমিটার নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে দাবি করে। বেইজিংয়ের মূল উদ্বেগ দেপসাং-দৌলত বেগ ওল্ডি (ডিবিও) খাতটি তার পশ্চিমাঞ্চল হাইওয়ে জি-২১৯ এর কাছে।

দেপসাং সীমান্তের এলএসি-জুড়ে এর গভীর অঞ্চলে ট্যাংক, আর্টিলারি বন্দুকসহ প্রায় ১২ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে চীন।

মে থেকে দেপসাং মালভূমিতে ভারতও পাল্টা দুটি অতিরিক্ত ব্রিগেড (যার প্রত্যেকটির প্রায় ৩ হাজার সৈন্য রয়েছে) ও ট্যাংক মোতায়েন করেছে।

জম্মু-কাশ্মীরে সেনার ১৬ কোরের সাবেক কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল রামেশ্বর রায় বলেন, ‘এতদিন চীনের পক্ষে দেপসাং ভ্যালিতে ঘাঁটি গেড়ে বসে থাকা মুশকিল ছিল। কারণ পাহাড়ের উপরে বেগ ওল্ডি বিমানঘাঁটি থেকে ভারত ওই এলাকায় কর্তৃত্ব করে। কিন্তু, এখন চীনের সেনা দেপসাং ভ্যালির দক্ষিণে গালওয়ান ভ্যালিতে পাহাড়ের মাথায় চলে এসেছে। ও দিকে প্যাংগং লেকের মধ্যে ঢুকে আসা ফিঙ্গার ফোর নামক পাহাড়ের মাথাতেও চীনের সেনা ঘাঁটি গেড়ে বসেছে। পরে চীন দেপসাংয়েও সামরিক শক্তি বাড়াতে শুরু করতে পারে। বাস্তবে এর অর্থ হলো, দেপসাং ভ্যালি থেকে একেবারে নিচে ডেমচক পর্যন্ত কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা চীনের রয়েছে।’

২০১৩ সালের এপ্রিল-মে মাসে দেপসাং ভ্যালিতে চীন প্রায় তিন সপ্তাহ সেনা ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল। পিএলএর সেনাবাহিনী সেসময় এলএসি পার হয়ে ১৯ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রবেশ করে। শেষ পর্যন্ত ২১ দিনের কূটনৈতিক আলোচনার পরে এই উত্তেজনার সমাধান হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Jamaat chief collapses twice, continues to speak

He continued addressing the rally while seated on the stage

40m ago