কুমিল্লায় বাসে তরুণীকে ধর্ষণ, চালক ও সহকারী গ্রেপ্তার
কুমিল্লার পদুয়ার বাজারে বাসের দরজা-জানালা বন্ধ করে তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত চালক ও তার সহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে, সুপারভাইজার এখনো পলাতক আছেন।
গ্রেপ্তার দুজনকে গতকাল সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী তরুণীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা ও ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। পরে আদালতে জবানবন্দি শেষে গত বুধবার রাতে তাকে মায়ের হেফাজতে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ওই তরুণী গত ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকার আবদুল্লাহপুরে তার চাচাতো বোনের বাসায় যায়। ১৪ সেপ্টেম্বর বাড়ি ফেরার উদ্দেশে বোনের বাসা থেকে বের হয়। সেখান থেকে ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে পৌঁছে। ওই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ‘তিশা প্লাস’ পরিবহনের একটি বাসযোগে কুমিল্লা শহরের শাসনগাছার উদ্দেশে রওনা হয়। বাসের কর্মীরা তাকে শাসনগাছা নামিয়ে দেবে বলে জানায়। কিন্তু, বাসের চালক ওই তরুণীকে শাসনগাছা বাস স্টপে না নামিয়ে কৌশলে পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় নিয়ে যায়।
মামলায় বলা হয়, মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে চালক, সহকারী, সুপারভাইজার বাসের দরজা-জানালা বন্ধ করে তরুণীকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে বাসের চালক বাস থেকে নেমে চলে যায়। এরপর সহকারী ও সুপারভাইজার তরুণীকে বাস থেকে নামিয়ে পদুয়ার বাজার এলাকায় সহকারীর ঘরে নিয়ে পুনরায় তাকে ধর্ষণ করে। পরে সকাল ৬টার দিকে ওই তরুণীকে অসুস্থ অবস্থায় ঘর থেকে বের করে দেয় এবং তাকে চলে যেতে বলে। পরে ভুক্তভোগী মোবাইলে তার মাকে পুরো ঘটনা জানায়।
গত মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে ভুক্তভোগীর মা পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় পৌঁছে ঘটনার বিস্তারিত জেনে অভিযুক্তদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করেন। এরপর তিনি বাদী হয়ে ওইদিন রাতে তিন জনের বিরুদ্ধে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় গণধর্ষণের মামলা করেন।
ভুক্তভোগীর মা বলেন, ‘আমার মেয়ে গাজীপুরের একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতো। করোনার কারণে পাঁচ মাস আগে বাড়িতে চলে আসে। গত শুক্রবার চাকরির খোঁজে বাড়ি থেকে ঢাকায় গিয়ে চাচাতো বোনের বাসায় ওঠে। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে এমন নিষ্ঠুর ঘটনার শিকার হয়। আমি নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’
গতকাল দুপুরে ‘তিশা প্লাস’ পরিবহনের পরিচালক বিমল দে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে বাসটিতে ঘটনা ঘটেছে সেই বাসের মালিক এই পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দুলাল হোসেন অপু। তবে, এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে আমরা তাদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
ওই পরিবহনের এমডি দুলাল হোসেন অপু সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঢাকা মেট্রো-ব ১৫-৩৯৮ গাড়ির চালক, সহকারী ও সুপারভাইজার এমন ঘটনা ঘটিয়েছে জানার পর আমরা চালক ও তার সহকারীকে পুলিশে সোপর্দ করেছি।’
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কমল কৃষ্ণ ধর সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় বাসের চালক ও তার সহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার অপর আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
Comments