পাটুরিয়ায় ট্রাক পারাপারে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত বেশি আদায়ের অভিযোগ
নাব্যতা সংকটে শিমুলিয়া-কঁঠালবাড়ি নৌপথে ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ওই পথের গাড়িগুলো পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে আসায় চাপ পড়েছে পাটুরিয়া ঘাটে। এই সংকটকে পুঁজি করে ট্রাক চালকদের কাছে প্রতি টিকিটে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত বেশি আদায়ের অভিযোগ উঠছে বিআইডব্লিউটিসির এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
জরুরি পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী গাড়িগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করার ফলে প্রতিদিনই এই ঘাটে আটকা পড়ছে শতশত সাধারণ ট্রাক। ফেরির টিকিটের জন্য তাদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে বাড়তি টাকা। যদিও বরাবরের মতো এই অভিযোগ অস্বীকার করছেন বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ।
গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার কমপক্ষে ২৫ জন ট্রাক চালকের সঙ্গে কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের। তারা জানান, বড় ট্রাকের ফেরি টিকিটের মূল্য ১৪৬০ টাকা, মাঝারি ট্রাকের ১০৬০ টাকা এবং ছোট ট্রাকের টিকিটের দাম ৭৪০ টাকা। ট্রাকের আকার ভেদে ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে। এই টাকা না দিলে টিকিট পাওয়া যায় না। দিনের পর দিন ঘাটে আটকে থাকতে হয়।
বিআইডব্লিউটিসি পাটুরিয়া কার্যালয়ের সূত্রমতে, প্রতিদিন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া হয়ে দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলায় যাচ্ছে প্রায় আড়াই হাজার গাড়ি। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই থাকে পণ্যবাহী ট্রাক। ঈদসহ বিভিন্ন ছুটিতে এই সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়। গাড়ির চাপ বেড়ে গেলে ফেরি পারাপারে হিমশিম খেতে হয়।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বলেন, ‘পাটুরিয়া ঘাট ব্যবস্থাপনায় বিআইডব্লিটিসিকে সহযোগিতা করে পুলিশ। আমি বিভিন্ন সময়ে বিআইডব্লিউটিসি এবং নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব দিয়েছি—পাটুরিয়া ঘাটের দুটি ট্রাক টার্মিনালকে এক করে সেখানে সার্কুলার রোড তৈরি করতে। সার্কুলার রোড তৈরি করলে ট্রাকগুলো টার্মিনালের নির্দিষ্ট প্রবেশ পথে ঢুকবে এবং আগের ট্রাকের পেছনে থাকবে। ট্রাকগুলো পর্যায়ক্রমে টার্মিনাল থেকে বের হয়ে ফেরিতে উঠে যাবে। এখন দুটি ট্রাক টার্মিনালে বিক্ষিপ্তভাবে ট্রাক রাখা হচ্ছে। এ কারণে সেখানে তিনশোর বেশি ট্রাক রাখা যাচ্ছে না। আর সার্কুলার রোড তৈরি করলে সেখানে এক হাজার ট্রাক রাখা যাবে। একটি নির্দিষ্ট পথে ঘূর্ণায়মান থাকলে, কোনো ট্রাকের পক্ষে সিরিয়াল ভাঙা কিংবা অতিরিক্ত টাকা নিয়ে টিকিট বিক্রির সুযোগ থাকবে না। আমি কর্তৃপক্ষকে আবারও এটা ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ করছি।’
ট্রাক পারাপারের টিকিটে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার পরও তা মানতে নারাজ বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বিআইডব্লিউটিসি আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) খোন্দকার তানভীর হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাছে কেউ এখনও অভিযোগ করেননি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Comments