গোমতী নদীর বালু উত্তোলন: আ. লীগ নেতাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
গোমতী নদীর বালুমহাল দখল করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে গতকাল কুমিল্লা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা হয়েছে।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাতসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছেন ঠিকাদার মাহবুবুর রহমান। তিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এম. রহমানের মালিক এবং গোমতী নদীর বালুমহালের পাঁচটি অংশের ইজারাদার। মাহবুবুর রহমান কুমিল্লা নগরীর নতুন চৌধুরী পাড়া এলাকার মৃত আবদুল মতিনের ছেলে।
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্যালেন মেয়র সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেল, সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান রাফি রাজু, আমীর হোসেন, শাহজাদা টুটুল, হাফিজুল ইসলাম, সাইফুল, নুরুজ্জামান শরমিনসহ মোট ১২ জন।
রোববার রাতে মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ সালাউদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ২০০ ধারায় বাদীর জবানবন্দি নিয়েছেন। তবে রোববার রাত পর্যন্ত আমরা ওই মামলায় আদালতের কোনো আদেশ পাইনি। আশা করছি এ ঘটনায় আদালতের কাছ থেকে আমরা ন্যায় বিচার পাব।’
মামলার বাদী মাহবুবুর রহমান এজাহারে উল্লেখ করেন, আরফানুল হক রিফাত ও তার লোকজন অবৈধভাবে গোমতী নদীর ১৩টি ঘাটে ২৫টি নৌকা দিয়ে ৩০ লাখ ঘনফুটের বেশি বালু উত্তোলন করছেন। যার মূল্য দুই কোটি ৭০ লাখ টাকা। কিন্তু তিনি বৈধ ইজারাদার হয়েও অবৈধ দখলকারীদের তৎপরতার কারণে ঠিকমতো নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, ‘আমার নিযুক্ত কর্মীরা ইজারাস্থানে গেলে তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাদের ভয়ে আমার লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।’
তারা যেকোনো সময় প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটাতে পারেন বলে মামলায় উল্লেখ করেন মাহবুবুর রহমান।
বেশ কিছুদিন ধরেই গোমতী নদীর বালুমহাল নিয়ে কুমিল্লা আওয়ামী লীগের দুপক্ষের মধ্যে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ ও পরস্পরবিরোধী একাধিক সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সাল থেকে কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহারের আস্থাভাজন আরফানুল হক রিফাতের নিয়ন্ত্রণে এই বালুমহালগুলো পরিচালিত হয়ে আসছিল। ২০২০ সালে কুমিল্লার ছয়টি ঘাটের মধ্যে পাঁচটি ঘাটের টেন্ডারের সর্বোচ্চ দরদাতা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম. রহমান।
এ বিষয়ে আরফানুল হক রিফাতের অভিযোগ, ইজারাপ্রাপ্ত দাবিদারের ইজারায় অংশগ্রহণের কাগজপত্র বৈধ নয়। সেজন্য টেন্ডার প্রক্রিয়াও সঠিক হয়নি।
Comments