বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস

মানবিক শহর গড়তে প্রয়োজন হাঁটা ও সাইকেলবান্ধব পরিবেশ

ঢাকা শহরে গণপরিবহন, হাঁটা ও রিকশার মাধ্যমে ৯৩ শতাংশ চলাচল হলেও পরিকল্পনায় এই মাধ্যমগুলোর প্রাধান্য নিশ্চিত করা হয়নি। যাতায়াতের চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গণপরিবহন, সাইকেল ও হাঁটার পরিবেশ উন্নয়নের যে যোগান, তা নিশ্চিত না হওয়ায় ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
DTCA.jpg
ডিটিসিএ সভাকক্ষে ‘বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত ‘হাঁটা ও সাইকেলে ফিরি, বাসযোগ্য নগর গড়ি’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তব্য রাখেন বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা শহরে গণপরিবহন, হাঁটা ও রিকশার মাধ্যমে ৯৩ শতাংশ চলাচল হলেও পরিকল্পনায় এই মাধ্যমগুলোর প্রাধান্য নিশ্চিত করা হয়নি। যাতায়াতের চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গণপরিবহন, সাইকেল ও হাঁটার পরিবেশ উন্নয়নের যে যোগান, তা নিশ্চিত না হওয়ায় ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে না করেও বর্তমান সড়কে যাতায়াত চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। এক্ষেত্রে প্রয়োজন কার্যকরী উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ। মানবিক শহর গড়তে স্বল্প দূরত্বের যাতায়াতের জন্য সাইকেলে ও হেঁটে নিরাপদে চলাচলের পরিবেশ তৈরি করা এবং অধিক দূরত্বের জন্য গণপরিবহন নিশ্চিত করা গেলে সমাজে সমতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) সভাকক্ষে ‘বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত ‘হাঁটা ও সাইকেলে ফিরি, বাসযোগ্য নগর গড়ি’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন ডিটিসিএ’র নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান। আয়োজনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সামসুল হক। অতিথি আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতার, আরবান ট্রান্সপোর্ট, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, নূর মোহাম্মদ মজুমদার, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্মসচিব নাসির উদ্দিন তরফদার, বুয়েটের নগর ও পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মুসলেহ উদ্দিন হাসান, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মোহাম্মদ খান, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাসসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। 

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলা হয়, ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে বিকল্প ব্যবস্থা নির্ধারণ করতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু গণপরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করলেই হবে না। অন্যান্য মাধ্যম, যেমন: রেল, নৌ , সাইকেল, রিকশা এবং হাঁটার সঙ্গে এর সমন্বয় করতে হবে। পরিকল্পিত ভূমি ব্যবহার নিশ্চিতের মাধ্যমে যাতায়াত জনিত সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। মেগা প্রকল্পসমূহের সুফল পেতে হলে সড়ক অবকাঠামোর দিকে নজর দিতে হবে। এতে করে প্রকল্পের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে। এজন্য বিচ্ছিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ না করে সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা প্রয়োজন।

নীলিমা আখতার বলেন, ‘ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য হাঁটা ও সাইকেলবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। বিশ্বের উন্নত দেশসমূহের যাতায়াত পরিকল্পনায় হাঁটা ও সাইকেলকে প্রাধান্য দেওয়ায় তারা যানজট হ্রাসে সমর্থ হয়েছে।’

নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, ‘ডিটিসিএ’র সঙ্গে সমন্বয় করে গাড়ির সংখ্যা নির্ধারণের জন্য আমরা কাজ করতে পারি। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের হেঁটে এবং বাস সার্ভিস চালু করলে যানবাহনের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।’

মুহ. আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে নতুন করে ১৮টি ওয়ার্ড যুক্ত হয়েছে। যা ঢাকা শহরের দেড়গুণ। আমরা এই ওয়ার্ডগুলোকে হাঁটা, সাইকেল এবং পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করব।’

অনুষ্ঠানের সভাপতি খন্দকার রাকিবুর রহমান বলেন, ‘অতি শীগগিরই আমরা দুই সিটি করপোরেশনের সঙ্গে রোড নেটওয়ার্ক, রাজউকের সঙ্গে ভূমি ব্যবহার এবং ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে আলোচনা করে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করব। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে এই কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত করব।’

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh’s exports slip 6.05% in November

Exports from Bangladesh declined 6.05 percent year-on-year to $4.78 billion in November amid a continued slowdown in readymade garment shipments, official figures showed today

1h ago