মদ্রিচের সঙ্গে জিদানের আচরণে ফুটে উঠল অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত
রিয়াল মাদ্রিদ তখন ২-১ গোলে পিছিয়ে। চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লেন টনি ক্রুস। তার বদলি হিসেবে মাঝমাঠের কাণ্ডারি লুকা মদ্রিচকে নামানোর সিদ্ধান্ত নিলেন কোচ জিনেদিন জিদান।
গুরুর কথা মেনে চটপট তৈরি হয়ে গেলেন ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার। কিন্তু মাঠে নামার আগে বেশ খানিকটা সময় নিলেন তিনি। জিদানও যেন ধৈর্যের প্রতিমূর্তি! কোনো রকম তাড়াহুড়ো না করে শিষ্যকে কৌশল বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকলেন। কিন্তু কেন?
ফুটবলাররা অনেক রকমের রীতিনীতি মেনে থাকেন ভীষণ নিষ্ঠার সঙ্গে। খেলা শুরুর আগে কিংবা খেলা চলাকালে সেগুলো তারা পালন করেন। এসব সংস্কার বা কুসংস্কার ম্যাচে সাফল্য পেতে কতটা ভূমিকা রাখে তা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হতে পারে, তবে ফুটবলারদের কাছে সেগুলো ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।
সাবেক তারকা ফুটবলার হিসেবে ফরাসি কিংবদন্তি জিদানেরও এসব অজানা নয়। তাই মাঠে ঢোকার আগে মদ্রিচ অনেকটা সময় ধরে যখন নিজস্ব সংস্কার পালন করলেন, তখন তিনি দেখালেন সহিষ্ণুতা।
প্রথমে সাইডলাইনের বাইরে হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন ৩৫ বছর বয়সী মদ্রিচ। এরপর খেলায় সৌভাগ্য পাওয়ার আশায় শিন প্যাডে (পায়ের গার্ড) চুমু খান। প্যাডটিতে একটি ছবি রয়েছে, যেখানে মদ্রিচ, তার স্ত্রী ও সন্তানদের দেখতে পাওয়া যায়।
মদ্রিচের সঙ্গে ডাগআউটে দাঁড়ানো জিদানের এমন আচরণ অনুকরণীয়ই বটে! রিয়াল বেতিসের মতো তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষের সঙ্গে পিছিয়ে থাকলেও দেরি করায় মদ্রিচকে একটুও তিরস্কার তিনি। তার চোখেমুখে ছিল না বিরক্তি বা রাগের ছাপ। বরং তিনি বোঝার চেষ্টা করেছেন শিষ্যের আবেগ ও নিবেদনকে।
এসব পরিস্থিতিতে সাধারণত মেজাজ হারিয়ে ফেলেন কোচরা। খেলোয়াড়দের কপালে জোটে গালমন্দ। উদাহরণ মিলবে ভুরিভুরি। কিন্তু জিদান তো আর সাধারণের কাতারে পড়েন না! রিয়ালের কোচ হিসেবে দুই দফায় চার বছরেরও কম সময়ের মধ্যে তিনটি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও দুটি লা লিগাসহ ১১টি শিরোপা জেতার কীর্তি সে সাক্ষ্যই দেয়।
শনিবার রাতে প্রতিপক্ষ বেতিসের মাঠে শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলে জিতেছে লা লিগার শিরোপাধারী রিয়াল। চলতি মৌসুমে এটি তাদের প্রথম জয়। ম্যাচের শেষ দিকে পেনাল্টি থেকে জয়সূচক গোলটি করেন দলনেতা সার্জিও রামোস।
Comments