শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হতে দীর্ঘ হচ্ছে অপেক্ষা
পদ্মায় নাব্যতা সংকটের কারণে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌ-রুটে দীর্ঘদিন ধরে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ড্রেজার দিয়ে পলি অপসারণ করেও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না। এখন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) বলছে, মধ্য অক্টোবরের আগে এই রুটে ফেরি চলাচল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
বিআইডব্লিউটিসি এর শিমুলিয়া ঘাটের এজিএম মো. সফিকুল ইসলাম জানান, বর্তমান চ্যানেলে পর্যাপ্ত গভীরতা না থাকায় মাঝে মাঝে ফেরিগুলো আটকে যায়। ড্রেজিং করে নাব্যতা সংকট দূর করার চেষ্টা চলছে। অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে ফেরি চলাচলে স্বাভাবিক অবস্থা আসার একটি সম্ভাবনা আছে।
তিনি জানান, ফেরি চালানোর জন্য হাজরা পয়েন্ট প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত বর্তমানে চায়না চ্যানেলে ফেরি চলবে। রো রো ও ডাম্প ফেরি চালানোর মতো অবস্থা এখনো তৈরি হয়নি।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বহরে থাকা ১৫টি ফেরির মধ্যে ছয়টি ফেরি যানবাহন পারাপার করছে। গতকাল এই নৌ-রুটে তিনটি ফেরি পরীক্ষামূলক চলাচল করে।
বিআইডব্লিউটিসি এর শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, সকাল ৬টা থেকে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌ-রুটে ছয়টি ফেরি পারাপার শুরু করেছে। তিনটি ঘাট দিয়ে এসব ফেরি চলছে। ফেরিগুলো হলো- কাকলি, কিশোরী, কুমিল্লা, ফরিদপুর, ক্যামেলিয়া ও কর্ণফুলী।
মাওয়া ট্রাফিক পুলিশ ফাঁড়ির ইন-চার্জ (টিআই) মো. হিলাল উদ্দিন জানান, শিমুলিয়া ঘাটে দুপুর থেকে ৩০টি ট্রাক ও ২০টির মতো যাত্রীবাহী যানবাহন পারের অপেক্ষায় আছে। ফেরি চালুর পর গাড়ির চাপ তেমন লক্ষ্য করা যায়নি।
শিমুলিয়া ঘাটের বিআইডব্লিউটিএ এর সহকারী পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন জানান, সকাল থেকে ফেরি চলাচল শুরু হওয়ায় লঞ্চে যাত্রীদের তেমন চাপ নেই। অনেক যাত্রী থাকে যারা গাড়ি রেখে লঞ্চে পার হয়ে থাকে। এছাড়া সন্ধ্যার পর চ্যানেলে খননযন্ত্র থাকায় নৌ-রুট সংকুচিত হয়ে পড়ে। সেজন্য যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দিয়ে সন্ধ্যা ৭টার জায়গায় ৬টায় ট্রিপ শেষ করা হয়।
বর্তমানে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌ-রুটে ৮৬টি লঞ্চ চলছে বলে জানান তিনি।
বিআইডব্লিউটিএ এর ড্রেজিং বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনামুল জানান, চলতি মৌসুমে স্রোত যেমন বেশি তেমনি বেশি পলি মাটি। নৌপথের আশেপাশে যেসব চর আছে সেগুলো ভেঙে মূল চ্যানেলে পড়ছে। এর জন্য ফেরি চলাচলে অসুবিধা তৈরি হয়।
তিনি জানান, চলতি অর্থবছরে এই নৌ-রুটে ৩৫ লাখ ঘনমিটার পলি অপসারণ করার টার্গেট আছে। এ পর্যন্ত প্রায় আট লাখ ঘনমিটার অপসারণ করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ এর পক্ষ থেকে দুইটি চ্যানেল ফেরি চলাচলের উপযোগী করা হয়েছিল। ওই দুটি চ্যানেলেই পলি জমে রয়েছে।
বর্তমানে চায়না চ্যানেল, মাদারীপুরের মাগুরখন্দ ও হাজরা চ্যানেলে প্রস্তুত করতে দশটি খননযন্ত্র কাজ করছে। হাজরা চ্যানেলটি ফেরি চলাচলের উপযোগী করতে সেখানে দুইটি ড্রেজার অবস্থান করছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, পলি অপসারণ করে পদ্মার চরে ফেলা হয়। এতে সেগুলো আবার নদীতে ফিরে আসার সুযোগ নেই। নাব্যতা সংকটে ফেরি চলাচল বন্ধ হওয়ার পেছনে প্রাকৃতিকে দায়ী করেন তিনি।
Comments