এমসি কলেজে ধর্ষণ: এজাহারের সব আসামি গ্রেপ্তার

প্রথম সারিতে বাঁ থেকে সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম ও শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, দ্বিতীয় সারিতে বাঁ থেকে অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুম। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজ ছাত্রাবাসে শুক্রবার সন্ধ্যার পর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পরপরই বিষয়টি জানাজানি হলে রাত ৯টার কিছু পরেই ছাত্রাবাস থেকে পালিয়ে যায় জড়িতরা। সে রাতেই তাদের শনাক্ত এবং ছয় জনের নামোল্লেখ করে মামলা করা হলেও পরদিন শনিবার কোনও আসামিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

তবে রবিবার সকাল থেকেই একে একে গ্রেপ্তার হতে থাকেন মামলার আসামিরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যেই এজাহারের ছয় আসামিকেই গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এছাড়াও গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর এ ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

গত শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ঘটনার পর রাত সোয়া তিন টার দিকে ছয় জনের নামোল্লেখ করে শাহপরান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন তরুণীর স্বামী।

মামলার আসামিরা হলেন, সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার চান্দাইপাড়া গ্রামের সাইফুর রহমান (২৮), সুনামগঞ্জ পৌর শহরের উমেদনগর নিসর্গ এলাকার বাসিন্দা তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বাগুনীপাড়ার শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার আটগ্রামের অর্জুন লস্কর (২৫), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম (২৫) এবং সিলেটের কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুম (২৫)।

এছাড়াও এ মামলায় আরো ২-৩ জন অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছেন। অভিযুক্ত সবাই মুরারিচাঁদ কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগ কর্মী।

যেভাবে গ্রেপ্তার

মামলার পর বিভিন্ন সূত্র, তথ্য, মোবাইল ফোন কল ও লোকেশন ট্রেস করে তাদের অবস্থান শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

রবিবার সকালে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা থেকে মামলার প্রথম আসামি সাইফুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সাইফুর একই সাথে ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষ থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র মামলার আসামি।

এরপরই হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী মনতলা এলাকা থেকে অর্জুন লস্করকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সেই রাতেই র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের এক অভিযানে হবিগঞ্জ সদর থেকে গ্রেপ্তার হয় আসামি শাহ মো মাহবুবুর রহমান রনি।

রনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার দেয়া তথ্যে সেই রাতেই সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা থেকে এই মামলার সন্দেহভাজন দুই আসামি রাজন মিয়া ও মো. আইনুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

পরে তাদের জড়িত থাকার বিষয় নিশ্চিত হলে সোমবার সকালে তাদের এই মামলার অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

সোমবার রাতেই সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে মামলার ৬ষ্ঠ আসামি মাহফুজুর রহমান মাসুমকে।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা থেকে মামলার দ্বিতীয় এজাহারনামীয় আসামি তারেকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

এরই মধ্যে গতকাল এবং আজ মামলার ছয় আসামিকে ৫ দিন করে রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত। বাকি আসামিদের আগামীকাল আদালতে হাজির করা হবে।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোতির্ময় সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তারেকের গ্রেপ্তারের মধ্যে দিয়ে এই মামলার এজাহারনামীয় সব আসামির গ্রেপ্তার শেষ হলো। এছাড়াও এ ঘটনায় জড়িত আরো দুই আসামিকেও শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে যদি আর কারো জড়িত থাকার বিষয় জানা যায়, তবে তাকেও দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Inside the 3-year plan to fix banks

Bangladesh has committed to a sweeping overhaul of its troubled financial sector, outlining a detailed three-year roadmap as part of its latest agreement with the International Monetary Fund.

9h ago