যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিমান চলাচল চুক্তি সই বাংলাদেশের

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বিমান চলাচল চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। এখন থেকে এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে বিমান চলাচলের প্রাথমিক ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে বলে জানানো হয়েছে।
BD and USA.jpg
সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বিমান চলাচল চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। এখন থেকে এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে বিমান চলাচলের প্রাথমিক ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে বলে জানানো হয়েছে।

আজ বুধবার সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে দুই দেশের মধ্যে অনুস্বাক্ষরিত চুক্তির আলোকে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিমান চলাচল চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো।

মুক্ত আকাশ নীতির ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত এই চুক্তি অনুযায়ী উভয় দেশ যেকোনো সংখ্যক বিমান সংস্থাকে তাদের মনোনীত বিমান সংস্থা হিসাবে দুই দেশের মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য মনোনীত করতে পারবে। প্রত্যেক দেশের মনোনীত বিমান সংস্থা দুই দেশের মধ্যে আকাশের তৃতীয় ও চতুর্থ মুক্ত অধিকারে যেকোনো এয়ারক্রাফট দ্বারা যেকোনো সংখ্যক যাত্রী বিমান ও কার্গো বিমান পরিচালনা করতে পারবে।

এ ছাড়াও, দুই দেশের মনোনীত বিমান সংস্থা আকাশের পঞ্চম মুক্ত অধিকারে যেকোনো মধ্যবর্তী কিংবা দূরবর্তী পয়েন্টে যেকোনো বিমান দ্বারা যেকোনো যাত্রী বিমান ও কার্গো বিমান পরিচালনা করতে পারবে। একইসঙ্গে উভয় দেশ কোড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত এই চুক্তি দুই দেশের বিমান যোগাযোগ খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর ফলে দুই দেশের এভিয়েশন শিল্পের নানা বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে। সরাসরি বিমান যোগাযোগ দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সহযোগিতার সকল ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। আজকের এই বিমান যোগাযোগ চুক্তি বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বিদ্যমান বন্ধুত্বের দৃঢ়তার নিদর্শন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশকে অন্যতম প্রধান এভিয়েশন হাব ও পর্যটন গন্তব্যে পরিণত করার জন্য বাংলাদেশের সকল বিমানবন্দরে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলমান রয়েছে। ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছি। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বিমানবন্দরসমূহে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছে। আইকাও’র প্রতিবেদনেও এর প্রতিফলন হয়েছে। সংস্থাটির ২০১৭ ও ২০১৯  সালের নিরাপত্তা বিধি প্রতিপালন প্রতিবেদনে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছে। আমরা আশা করি, সব শর্ত পূরণ করে আমরা অচিরেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি বিমান যোগাযোগ স্থাপন করতে পারব।’

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক বলেন, ‘এই চুক্তি দুই দেশের এভিয়েশন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ও সরাসরি বিমান যোগাযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়াও, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল শুরু করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশনের (এফএএ) নির্ধারিত ক্যাটাগরি-১ অর্জনের জন্য কাজ চলমান রয়েছে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা কামনা করছি।’

বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার বলেন, ‘আজ স্বাক্ষরিত বিমান চলাচল চুক্তি দুই দেশের বন্ধুত্বকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সরাসরি বিমান যোগাযোগ চালু হলে তা দুই দেশের জনগণের সম্পর্ককে নতুন মাত্রা প্রদান করবে। এই চুক্তি ব্যবসা-বাণিজ্যসহ পর্যটনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’ 

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাব্বির আহমেদ চৌধুরী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনেন্দ্র নাথ সরকার প্রমুখ।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago