বাবরি মসজিদ মামলা: অভিযুক্তদের সবাই বেকসুর খালাস
![babri_masjid_0.jpg babri_masjid_0.jpg](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/babri_masjid_0_0.jpg?itok=BNjbeBv0×tamp=1588951717)
ভারতের অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ছিল না বলে রায় দিয়েছেন লক্ষ্ণৌর বিশেষ সিবিআই আদালত। আজ বুধবার বিচারক সুরেন্দ্র কুমার যাদব এই রায় ঘোষণা করেন।
২৮ বছর ধরে চলা এই মামলায় অভিযুক্ত সবাইকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
এই মামলায় ৪৯ জন অভিযুক্তের মধ্যে ইতোমধ্যেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অশোক সিংঘল, শিবসেনার বাল ঠাকরে, অযোধ্যার পরমহংস রামচন্দ্র দাসসহ ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, জীবিত আছেন ৩২ জন।
আজ ৩২ জন অভিযুক্তের মধ্যে ২৬ জনকে আদালতে উপস্থিত থাকার আদেশ দেওয়া হয়। বাকি ছয় জন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রায় ঘোষণার সময় অংশ নেন। মসজিদ ভাঙার ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা ও উস্কানির অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বলিষ্ঠ নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি, মুরলিমনোহর যোশী, সাবেক মন্ত্রী কল্যাণ সিং ও উমা ভারতীর বিরুদ্ধে।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে ৯২ বছর বয়সী লালকৃষ্ণ আদভানি ও ৮৬ বছর বয়সী মুরলিমনোহর যোশী সশরীরে আদালতে উপস্থিত হননি। কল্যাণ সিং করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পথে থাকায় তিনিও আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি।
উমা ভারতীও করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে থাকায় আজ আদালতে উপস্থিত থাকতে পারেননি। রায় ঘোষণার আগে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘অযোধ্যা আন্দোলনের অংশ হওয়া আমার জন্য সম্মানের বিষয়। কারাগারে যাওয়ার সাজা পেলে আমি জামিন চাইব না।’
হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, রায়ের আগে আদালতের বাইরে অভিযুক্তদের অনেকেই মসজিদ ভাঙার কথা স্বীকার করেন। বিজেপি নেতা বেদান্তি জানান, ভগবান রামের জন্য ফাঁসিতে যেতেও রাজি আছেন তিনি।
তৎকালীন শিবসেনার উত্তর ভারতের প্রধান ভগবান গোয়েল জানান, আদালতে তিনি মসজিদ ধ্বংসে নিজের দায় স্বীকার করেছেন।
আদালতের বাইরে অন্যতম অভিযুক্ত শিবসেনা পবন পাণ্ডে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘যদি আমি শাস্তি পাই, তবে এই জন্মকে প্রভু রামের সেবায় সফল মনে করব।’
‘মসজিদ ভাঙা দৈব কাজ’, বলেন অভিযুক্ত আচার্য ধর্মেন্দ্র।
এ মাসের শুরুতেই এই ৩২ জন অভিযুক্তের জবানবন্দি রেকর্ড করেন আদালত।
উল্লেখ্য, মুঘল সম্রাট বাবরের নামে প্রতিষ্ঠিত ১৫ শতকের ওই মসজিদটি সম্রাটের সেনাপতি মীর বাকি নির্মাণ করেছিলেন বলে জনশ্রুতি আছে। মসজিদ নির্মাণের স্থানটিকে রামের জন্মভূমি বলে দাবি করে আসছেন অনেকে। একটি পুরনো মন্দির ভেঙে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল বলে দাবি করেন তারা।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর শতবর্ষী বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ছড়িয়ে পড়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় সেসময় ভারতজুড়ে অন্তত ১ হাজার ৮০০ জন নিহত হন।
গত নভেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক আদেশে মসজিদের ওই জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণ করার অনুমতি দিয়েছেন।
Comments