নিখোঁজের ১১ দিন পর ঠাকুরগাঁও সীমান্তে যুবকের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার রত্নাই সীমান্তের কাছে নাগর নদে আব্দুল হক ওরফে আদু মিয়া (৩৫) মিয়া নামের এক যুবকের মরদেহ নিখোঁজের ১১ দিন পর উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, তিনি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ছোঁড়া পাথরের আঘাতে মারা গেছেন।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভোরে তিনি বিএসএফ সদস্যদের হাত থেকে বাঁচতে নাগর নদে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার মরদেহ উদ্ধারের পর আজ বুধবার দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আদু মিয়া বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার জুগিহার গ্রামের এজাবুল হকের ছেলে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আকালু ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আদু মিয়া গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক আটটার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে তার অন্য সঙ্গীদের সঙ্গে ভোরে আনুমানিক তিনটার দিকে রত্নাই সীমান্তের ৩৮৩ নম্বর মেইন পিলারের ২ নম্বর সাব পিলার এলাকার লোহার সেতুর নিচ দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ চেষ্টা করছিলেন। তখন বিএসএফের ১৭১, সোনামতি ক্যাম্পের টহলরত সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে।
এ সময় বিএসফের হাত থেকে বাঁচতে আহত আদু মিয়াসহ অন্যান্যরা নাগর নদে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অন্যরা পালিয়ে বাংলাদেশে চলে এলেও আদু মিয়া নিখোঁজ হন।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রত্নাই সীমান্তের ৩৮১ নম্বর পিলারের ৩ নম্বর সাব পিলার এলাকার নাগর নদে আদু মিয়ার মরদেহ ভেসে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে।
আদু মিয়ার ছোট ভাই জয়নাল আলীর দাবি, তার ভাইকে পাথর মেরে হত্যা করেছে বিএসএফ।
আমজানখোর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আকালু বলেন, ‘আদু মিয়ার মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।’
তার আগে, গত ৩ আগস্ট একই সীমান্তের নাগর নদ থেকে আল মামুন নামের এক যুবকের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার হয়। তাকেও বিএসএফ সদস্যরা পাথর ছুড়ে মেরেছিল।
গত ১০ সেপ্টেম্বর বেউরঝারী সীমান্তের নাগর নদে মাছ ধরতে গেলে বিএসএফের গুলিতে শরিফুল ইসলাম নামে এক জেলে নিহত হন।
এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ঠাকুরগাঁও ৫০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শহিদুল ইসলাম জানান, সীমান্তে পাথর ছুড়ে জখম করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বেঠক হলে সেখানে বিএস এফ পাথর ছোঁড়ার বিষয়টি অস্বীকার করে।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) হাসিবুল হক প্রধান মুঠোফোনে বলেন, ‘সীমান্তে উদ্ধার আদু মিয়ার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে ময়নাতদন্তের পরে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
Comments