প্রকল্পের কাজ অসম্পূর্ণ, পুরো বিল তুলে নেওয়ার অভিযোগ

লালমনিরহাটে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি’র ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাধীন আদিতমারী উপজেলার চারালি বিলের সাড়ে চার কিলোমিটার খাল খনন। ছবি: স্টার

লালমনিরহাটে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি’র ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে অনিয়ম ও কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই পুরো বিল উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে জেলার আদিতমারী উপজেলার চারালি বিলের সাড়ে চার কিলোমিটার খাল খননে এ অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সাড়ে চার কিলোমটিার দৈর্ঘ্য এ খালটির পাড়সহ প্রশস্ত ১৮ ফিট। এরমধ্যে খালের প্রশস্ত ১০ ফিট, আর উভয় পাড়ের প্রশস্ত আট ফিট। খালটির গভীরতা দুই মিটার। কিন্তু, দীর্ঘ এ খালটি পরিদর্শনে কোথাও এ পরিমাপটি পাওয়া যাবে না। খালটি এখন পাড়সহ ১০-১২ ফিট প্রশস্ত আর গভীরতা দেড় মিটারও হবে না।

খালটির খোড়ারপুল এলাকার কৃষক মামুন হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘খাল খননের জন্য এখানে এক্সেভেটর মেশিন আনা হয়েছিল। মেশিনটি তিন দিন রেখে খাল খনন না করেই চলে গেছে। এখানে কোনো খাল খনন করেনি এলজিইডি। আমরা শুধু মেশিনে দেখতে পেয়েছি। কিন্তু মেশিনের কোনো কাজ-কর্ম দেখিনি।’

একই এলাকার কৃষক মাসুদ রানা বলেন, ‘এখানে খালটি খনন না করায় খালটির গভীরতা কমে গেছে। সে কারণে পানিপ্রবাহ বাঁধাগ্রস্ত হয়ে ফসলের ক্ষতি করছে।’ কৃষকের স্বার্থে খালটি খননে সরকার অর্থ বরাদ্দ দিলেও তা নামমাত্র কাজ করে পুরো টাকাই আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এই কৃষক।

এ খালের সাকোয়া এলাকার কৃষক রাজ্জাক হোসেন বলেন, ‘এখানে এক্সেভেটর মেশিন বসিয়ে নামমাত্র তিন-চারদিন খনন করে চলে গেছে। ঠিকমতো গভীর করা হয়নি খালটি। খালের দুই পাড় প্রশস্ত করা হয়নি। খালটি আগের মতোই রয়েছে।’

একই এলাকার কৃষক আনছার আলী বলেন, ‘খাল খনন করার দুই মাসে খালটি আগের মতো হয়ে গেছে। সরকারের বরাদ্দকৃত টাকার তুলনায় ২০ শতাংশ কাজও করা হয়নি খালটি খননে। সে কারণে কোনো উপকারে আসছে না খালটি।’

এলজিইডি’র ক্ষুদ্রকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের চারালি বিল কৃষক সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, সমিতির সদস্যরা এ বিলের খাল খনন প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত হলেও সবকিছু করেছেন এলজিইডি’র লোকজন। এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারবেন না বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এলজিইডি’র কর্তৃপক্ষই সবকিছু জানেন।’

এলজিইডি’র ক্ষুদ্রকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী ফরহাদ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট খালের কৃষক সমিতির সদস্য দিয়েই খালটি খনন করা হয়েছে এবং সঠিকভাবে কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে। এ প্রকল্পের সমুদয় বিল জুলাই মাসেই উত্তোলন করে সমিতিকে দেওয়া হয়েছে। যে অংশে খাল খনন করা হয়নি, সে অংশ পরবর্তীতে খনন করা হবে।’

লালমনিরহাট এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফ আল খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘চারালি বিলের খাল খননটি সংশ্লিষ্ট এলাকার সমিতির সদস্যরাই করেছেন।’ খালটি খননে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘অনিয়ম হয়ে থাকলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবো।’

Comments

The Daily Star  | English

Opening aid corridors, leasing out ports not this govt’s job

Making decisions on a “humanitarian corridor” to Rakhine and leasing out container terminal of Chittagong Port to foreign companies are not the interim government’s job, said BNP acting chairman Tarique Rahman last night.

3h ago