চীন-জাপানের জনগণের কাছে ট্রাম্প-বাইডেন বিতর্ক ‘লাইভ ঝগড়া’

স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার রাতে আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রথম বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয় বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে। তাদের এই বিতর্ক চীন এবং জাপানের জনগণ দেখছেন ‘লাইভ ঝগড়া’ হিসেবে। তবে, ভিয়েতনামের জনগণ অভিমত জানাচ্ছেন ট্রাম্পের পক্ষে।

স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার রাতে আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রথম বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয় বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে। তাদের এই বিতর্ক চীন এবং জাপানের জনগণ দেখছেন ‘লাইভ ঝগড়া’ হিসেবে। তবে, ভিয়েতনামের জনগণ অভিমত জানাচ্ছেন ট্রাম্পের পক্ষে।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যকার বিতর্কটি এক পর্যায়ে রূপ নেয় ব্যক্তিগত আক্রমণে। ৯০ মিনিটের এই বিতর্কটি কোনো সমাধান ছাড়াই শেষ হয়। চীনের বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি আমেরিকার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরাজয় এবং চীনের মতো প্রতিপক্ষদের জন্য বিজয়।

নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিজ্ঞানী গু সু বলেন, ‘উভয় প্রার্থী তাদের প্রচারণায় প্রাধান্যে থাকা পররাষ্ট্রনীতিতে বিষয় হিসাবে চীনকে ফোকাস করতে বেছে নিয়েছে। তবে, আমরা চীন সম্পর্কে প্রত্যাশা অনুযায়ী কিছু পাইনি তাদের বক্তব্যে।’

তিনি জানান, দুই প্রার্থী বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে প্রথম সপ্তাহগুলোতে চীনের অবস্থান নিয়ে আলোচনা শুরু করলেও এর পরিসংখ্যান এবং বাণিজ্যিক বিষয়ে বিতর্কের বাস্তব অবস্থানটি তুলে আনতে পারেননি।

তিনি বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে, এটি একটি অগোছালো এবং বেশ কয়েক বছরের প্রেসিডেন্ট বিতর্কের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ হয়েছে। এই বিতর্কের কোনো বিজয়ী নেই, কারণ এটি বিশ্বের অন্যতম উন্নত গণতন্ত্র হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীলদের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।’

এই বিতর্কের বিষয় বস্তু চীন হওয়ার জবাবে বেইজিং জানিয়েছে, তাদেরকে রাজনৈতিক ফুটবল বানানো উচিত না।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, ‘মার্কিন নির্বাচনে যারা চীনকে নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার করছে, আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে তার বিরোধিতা করছি।’

বেইজিং ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড কালচার ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড রিজিওনাল স্টাডিজের মার্কিন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ হুয়াং জিং বলেন, ‘উভয় প্রার্থীই তাদের প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করার জন্য চীনকে ব্যবহার করতে চেয়েছে। যার ফলে চীন সম্পর্কে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। তারা একে অপরের অতীত নিয়ে কথা বলতে থাকেন এবং স্পষ্টতই ট্রাম্প পয়েন্ট অর্জনের জন্য মুখিয়ে ছিলেন।’

নির্বাচনের এই বিতর্কটি চীনে প্রচার করা হয়নি। এমনকি ইন্টারনেট নিরাপত্তার কারণে অনলাইনেও তা দেখতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন অনেক মার্কিন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ।

জাপানের এনএইচকে টেলিভিশনে এই বিতর্ক দেখানো হয়েছে। দেশটির জনগণের মতামতও চীনের মতোই।

টুইটারে একজন এই বিতর্কের বিষয়ে লিখেছেন, ‘ডিসেন্ট আমেরিকানদের জন্য আমার খুবই খারাপ লাগছে।’

টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয়ের টোকিও ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক বিজ্ঞানের অধ্যাপক হিরোমি মুরাকামি বলেন, ‘এর কিছু অংশ বিনোদনমূলক ছিল। তবে বিতর্কটি আনপ্রেসিডেন্সিয়াল হয়ে ওঠায় আমি বেশি হতবাক হয়েছিলাম।’

হক্কাইডো বুঙ্কিও বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক মাকোটো ওয়াটানাবে বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম গত দশক বা তার আগের দশকে আমেরিকান রাজনীতিতে কীভাবে মেরুকরণ হয়েছে তার চিত্রিত প্রতীক ছিল এটা। দুই নেতা এবং তাদের নিজ শিবিরের মধ্যে কোনো কথোপকথন নেই।’

ভিয়েতনামের সর্বাধিক পঠিত অনলাইন সংবাদপত্র ভিএনএক্সপ্রেসে একটি সমীক্ষার আয়োজন করা হয়েছিল। এতে ভোট দাতাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ ট্রাম্পের পক্ষে এবং ২০ শতাংশ বাইডেনের পক্ষে রায় দেন।

চীন বিরোধী অবস্থানের কারণেই এমনটি হয়েছে বলে মনে করেন অনেকেই। চোউং ভ্যান নামের ভিয়েতনামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেন, ‘আমি আশা করি মি. ট্রাম্প চীনকে ধ্বংস করতে নির্বাচিত হবেন। কারণ চীন অন্যান্য দেশের প্রতি যে আচরণ করছে তার প্রতিবাদ আর কোনো দেশের প্রেসিডেন্ট করেননি মি. ট্রাম্পের মতো।’

Comments

The Daily Star  | English
Islami Bank's former managing director Abdul Mannan

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago