আটক ৩৭০ অভিবাসী শ্রমিকের মুক্তির দাবি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের
গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশে ফিরে আসার পর আটককৃত অন্তত ৩৭০ অভিবাসী শ্রমিককে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
আজ বৃহস্পতবার সংস্থাটির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ঢাকায় ফেরার পর বিদেশে ‘অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সংশ্লিষ্টতা থাকায়’ গত ২২ সেপ্টেম্বর ৩২ জনকে আটক করা হয়।
ইতালি ও ইউরোপের অন্যান্য দেশে যাওয়ার চেষ্টাকালে ওই ৩২ জনকে প্রথমে সিরিয়ায় কারাগারে বন্দি করা হয়। পড়ে, ১৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে ফেরেন। এরপর, তাদের দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টিন শেষ হলে সরকার তাদের আটক করে।
বাংলাদেশের বাইরে কোনও ফৌজদারি অপরাধে সংশ্লিষ্টতা থাকার সন্দেহে তাদেরকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারার অধীনে কারাগারে রাখা হয়।
এর আগে, মে মাস থেকে কুয়েত, কাতার ও বাহরাইন ফেরত ২১৯ প্রবাসী কর্মীকে ৫ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয়। প্রত্যাবর্তনকারীরা বিভিন্ন 'অপরাধে' ওইসব দেশে কারাগারে ছিলেন, পুলিশের এমন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার একটি আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠান। তবে 'অপরাধের' বিষয়ে নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
সাজা কমিয়ে তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হলেও, তাদের 'অপরাধের' বিষয়ে তদন্ত চলাকালীন কারাগারে রাখার পুলিশের অনুরোধ আদালত মঞ্জুর করেন।
গত ২১ জুলাই কাতারফেরত ৩৬ অভিবাসী কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ১ সেপ্টেম্বর ভিয়েতনাম থেকে দেশে ফেরা ৮১ জন ও কাতার থেকে আসা অপর দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সেক্রেটারি জেনারেল অফিসের পরিচালক ডেভিড গ্রিফিথস বলেন, 'নির্বিচারে শ্রমিকদের আটকে রাখা নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তির লঙ্ঘন। বাংলাদেশও ওই চুক্তিতে সই করেছিল।'
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে কর্তৃপক্ষ কেবল এই শ্রমিকদের কথিত অপরাধের কোনও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়নি, তারা কোনও ফৌজদারি অভিযোগ উল্লেখ করতেও ব্যর্থ হয়েছে। এইসব নারী-পুরুষদের আটক করে বাংলাদেশ মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।'
সংস্থাটি জানায়, অনেককে কয়েক মাস ধরে আটকে রাখা হয়েছে। আর, দেরি করা ঠিক নয়। বাংলাদেশকে হয় তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনতে হবে নতুবা এখনই মুক্তি দিতে হবে।
'বাংলাদেশের পুলিশ আদালতের কাছ থেকে এই শ্রমিকদের আটক রাখার জন্য অনুমতি নিয়েছে। কিন্তু, একাধিক দেশ সংশ্লিষ্ট শতাধিক এ সব মামলার তদন্তে কত দিন সময় লাগবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।'
'অনির্দিষ্টকালের জন্য এভাবে বিনা অভিযোগে কারাবন্দী করে রাখা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য,' বিবৃতিতে বলা হয়।
Comments