মাস্ক তৈরির টাকায় চলছে ৫ শতাধিক নারীর সংসার
করোনা দুর্যোগকালে ঘরে বসে মাস্ক তৈরি করছেন কুড়িগ্রামের পাঁচ শতাধিক নারী। একটি বেসরকারি সংস্থা তাদের কাছ থেকে মাস্ক কিনছে। সেই আয় দিয়েই চলতে তাদের সংসারের ব্যয়।
চিলমারী উপজেলার রমনা এলাকার নাজমা বেগম বলেন, করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে তার স্বামীর আয়-রোজগার কমে গেছে। মাস্ক তৈরির টাকায় তাদের সংসার চলছে। এই কাজ না পেলে তাদের কঠিন সময় পার করতে হতো। প্রতিদিন তিনি ২০ থেকে ২৫টি মাস্ক তৈরি করতে পারেন। প্রতিটি মাস্ক বিক্রি করে পাঁচ টাকা করে পান।
রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ গ্রামের দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করেন লিপি বেগম। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মাস্ক তৈরির আয় দিয়েই সংসার চালাচ্ছি। প্রতিদিন গড়ে ৩৫ থেকে ৪০টি মাস্ক তৈরি করতে পারি। কিন্তু কাজ নিয়মিত নয়। এনজিও থেকে সপ্তাহে চার দিন অর্ডার পাই। এই কাজ না থাকলে সন্তানদের নিয়ে অনাহারে থাকতে হতো।’
উলিপুর উপজেলার হাতিয়া এলাকার রোজিনা বেগম বলেন, তিন মাস আগে এনজিও থেকে তারা মাস্ক তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। আগেও সেলাইয়ের কাজ করতেন। একটি মাস্ক তৈরি করতে তার ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় লাগে।
বেসরকারি সংস্থা ইকো সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) স্বপ্ন প্রকল্পের কুড়িগ্রাম জেলার সমন্বয়ক অরুণ চন্দ্র অধিকারী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সেলাইয়ের কাজে নিযুক্ত এমন নারীদের মাস্ক তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাদের মাস্ক তৈরির সব সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে। তারা মাস্ক তৈরি করে অফিসে জমা দিয়ে যায়। প্রতিটি মাস্ক আমরা পাঁচ টাকা করে কিনে নিই।’
ইউএনডিপি’র স্বপ্ন প্রকল্পের রেজিওনাল কো-অর্ডিনেটর আমেদুল কবীর আকন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কুড়িগ্রামের নারীদের তৈরি মাস্ক দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এতে কুড়িগ্রামের নারীরা আয় করার সুযোগ পাচ্ছেন, আবার মাস্ক বিতরণ করায় করোনার বিস্তার রোধে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।’
Comments