মানিকগঞ্জ শহরে জলাবদ্ধতা, বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা
মানিকগঞ্জ জেলা শহরের রিজার্ভ ট্যাংক এলাকায় এক বর্গকিলোমিটার জায়গাজুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে, ওই এলাকার কমপক্ষে এক হাজার পরিবার চরম দুর্ভোগের মধ্যে আছেন। এই মুহূর্তে তাদের ঘর থেকে বের হতে বাঁশের সাঁকোই তাদের একমাত্র ভরসা। আর তা নাহলে হাঁটু বা কোমর পর্যন্ত নোংরা পানি পেরিয়ে যেতে হবে।
রিজার্ভ ট্যাংক এলাকাটি মানিকগঞ্জ পৌরসভার ছয় নং ওয়ার্ডের পশ্চিম দাশড়া মৌজায় অবস্থিত। উত্তরদিকে গার্লস স্কুল সড়ক, পশ্চিমে বেউথা সড়ক, দক্ষিণে রমজান আলী সড়ক এবং পূর্বে বাজার সড়ক ঘিরে রেখেছে এই এলাকাটি।
এবারের বন্যায় রমজান আলী সড়কের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এই এলাকায় পানি ঢুকে পড়ে। প্রতিটি বাড়িঘর পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এলাকাবাসী চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকো বানিয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে। কেউ কেউ ছোট নৌকা কিংবা কলাগাছের ভেলা বানিয়েও চলাফেরা করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এ এলাকায় এখন অসংখ্য একবাঁশের সাঁকো। ভবনের সামনে নৌকা কিংবা কলা গাছের ভেলা। এলাকাবাসী যাতায়াতের জন্য এগুলো ব্যবহার করছে।
ওই এলাকার বাসিন্দা সাব্বিরুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি সময়ে অসংখ্য বাড়ি-ঘর গড়ে উঠেছে। বেশিরভাগই বহুতল ভবন। এসব বাড়ির মালিকরা নিরাপদ উচ্চতায় বাড়ি নির্মাণ করলেও সংযোগ সড়ক নির্মাণের প্রতি নজর দেননি। পৌরসভা থেকেও রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি। ফলে প্রতিটি বাড়িঘরের পাশের নিচু খালি জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ডোবা। এবারের বন্যায় বড় বড় রাস্তা উপচে পানি ঢুকে পড়েছে ওই সমস্ত ডোবায়। সৃষ্টি হয়েছে এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে জলাবদ্ধতা। অবর্ণনীয় দুর্ভোগে আছে এলাকাবাসী।
আরেক বাসিন্দা আজাহারুল ইসলাম আরজু বলেন, ‘দীর্ঘদিন বলার পর পৌরসভা থেকে ছোট একটি মেশিন দিয়ে কয়েকদিন দু-তিন ঘণ্টা করে পানি নিষ্কাশন করেছে। কিন্তু, মেশিন এত ছোট যে তা দিয়ে খুব একটা কাজ হচ্ছে না। তলিয়ে যাওয়া রাস্তাগুলোতে বালির বস্তা দিলে চলাফেরা সহজ হবে।’
এ ব্যাপারে ছয় নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুভাষ সরকার বলেন, ‘পাম্প মেশিন বসিয়ে পানি নিষ্কাসনের চেষ্টা করা হচ্ছে। আরও মেশিন দরকার। ভবিষ্যতে যাতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে পরিকল্পিতভাবে রাস্তা নির্মাণ করা হবে।’
মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম বলেন, ‘বেউথা সড়কের উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় ওই সড়কের পাশের ড্রেন আপাতত বন্ধ আছে। এ কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ছোট আকারে কয়েকটি কালভার্ট তৈরি হলে এবং রাস্তাটির উন্নয়ন কাজ শেষ জলাবদ্ধতা দূর হয়ে যাবে।’
Comments