শিশু জান্নাতুল হত্যার সাড়ে ৬ মাস পরে মা ও সৎবাবা গ্রেপ্তার
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে শিশু জান্নাতুল ফেরদৌসকে হত্যার সাড়ে ছয়মাস পর মা ও সৎ বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ময়মনসিংহ।
গতকাল টঙ্গী পূর্বথানার পূর্ব আরিচপুর এলাকা থেকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. আবুল কাশেম হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল মিয়া ও তার স্ত্রী আকলিমা খাতুনকে গ্রেপ্তার করেন।
পিবিআই ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, জান্নাতুল পেটে থাকতেই প্রায় তিন বছর আগে তার বাবা আতিকুল (৪০) মারা যান। জান্নাতুল জন্মের কিছুদিন পরে মা আকলিমা (৩৫) খাতুন নতুন সংসার পাতেন গৌরীপুরের কোনাবাড়ি গ্রামের বাবুল মিয়ার সঙ্গে। আকলিমা বাবুলের তৃতীয় স্ত্রী এবং তারা রাস্তা মেরামত শ্রমিক হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেন। করোনার সময় তারা গৌরিপুরে গ্রামের বাড়িতে ছিলেন।
চলতি বছরের ১৮ মার্চ সকালে বাবুল মিয়া চা খেতে বাজারে যান। জান্নাতকে বারান্দায় বসিয়ে রেখে মা ঘরের পেছনে লাকড়ি কুড়াতে যায়। সকাল ১০টার দিকে বাবুল মিয়া জান্নাতকে চড় থাপ্পড় মারে এবং গলা চেপে ধরে। মেয়ের কান্না শুনে মা আকলিমা দৌড়ে এলে বাবুল বারান্দা থেকে জান্নাতকে উঠানে ফেলে দেন। পরে জান্নাতকে নিয়ে আকলিমা ও বাবুল হাসপাতালে পৌঁছালে কর্তব্যরত ডাক্তার শিশু জান্নাতুলকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে, হাসপাতালে পুলিশি ঝামেলা এড়াতে বাবুল জানিয়েছিল পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়ে জান্নাত মারা গেছে।
পরে বাবুল মিয়া গ্রামে না ফিরে পার্শ্ববর্তী বালুয়াপাড়ায় বোনের বাড়িতে যায়। ওইদিন সন্ধ্যার পর তারা জান্নাতের মরদেহ গৌরীপুর পৌরসভাসসস্থ ২ নং রেলগেইট সংলগ্ন ভৈরবগামী রেল লাইনের পূর্বপাশে মরদেহ রেখে তারা টঙ্গী চলে যায়।
পরের দিন জান্নাতের মরদেহ অজ্ঞাতনামা হিসেবে থানা পুলিশ ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে। পরে বেওয়ারিশ মরদেহ হিসেবে দাফন সম্পন্ন করে। পরে পোস্টমর্টেম রিপোর্টে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রতিবেদন আসে। তখন এসআই উজ্জ্বল মিয়া বাদী হয়ে গৌরীপুর থানায় মামলা রুজু করে। পরে মামলার তদন্ত শুরু করে পিবিআই।
গৌতম কুমার বিশ্বাস আরও জানান, গ্রেপ্তার বাবুল মিয়া ও আকলিমা জিজ্ঞাসাবাদে জান্নাতুলকে হত্যার দায় স্বীকার করে উপরোক্ত ঘটনার বর্ণনা দেন। আজ তাদের ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার জবানবন্দি গ্রহণে আদালতে হাজির করা হয়।
Comments