রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল যন্ত্রাংশ পাঠাতে শুরু করেছে রাশিয়া

চলতি বছরের মধ্যেই প্রকল্প এলাকায় এসে পৌঁছাবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের মূল যন্ত্রাংশ। দেশের সর্ববৃহৎ এই উন্নয়ন প্রকল্পের ভারী যন্ত্রাংশগুলোও এ বছরের মধ্যে নদীপথে নিয়ে আসা হবে।
Rooppur.jpg
ছবি: স্টার

চলতি বছরের মধ্যেই প্রকল্প এলাকায় এসে পৌঁছাবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের মূল যন্ত্রাংশ। দেশের সর্ববৃহৎ এই উন্নয়ন প্রকল্পের ভারী যন্ত্রাংশগুলোও এ বছরের মধ্যে নদীপথে নিয়ে আসা হবে।

প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত রাশিয়ার পারমাণবিক সংস্থা রসাটম’র পি-আর শাখার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, রাশিয়া থেকে রিয়্যাক্টর প্রেশার ভেসেল ও স্টিম জেনারেটর নিয়ে দুটি জাহাজ ইতোমধ্যেই রওনা হয়েছে। সমুদ্রপথে প্রায় ১৪ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে জাহাজ দুটি এ বছরের শেষ দিকে দেশে এসে পৌঁছাবে।

রসাটম জানায়, সেপ্টেম্বরের শেষে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ইউনিট-১ এর জন্য চারটি স্টিম জেনারেটরের মধ্যে ৩৪০ মেট্রিক টন ওজনের সবচেয়ে বড় ও সর্বশেষ স্টিম জেনারেটর নিয়ে একটি জাহাজ রসাটমের যন্ত্রাংশ নির্মাণ কারখানা ভলগদনস্ক থেকে যাত্রা শুরু করেছে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে জাহাজটি নদীপথে পাবনার ঈশ্বরদীতে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প এলাকায় এসে পৌঁছাবে।

এর আগে, রাশিয়া থেকে ইউনিট-১ এর তিনটি জেনারেটরসহ রিয়্যাক্টর প্রেশার ভেসেল পাঠানো হয়। গত ২০ আগস্ট এটি বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।

রসাটমের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, নভেম্বরের মধ্যেই প্রথম রিয়্যাক্টর প্রেশার ভেসেলটি বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে।

প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, জাহাজ দুটির মাধ্যমেই দেশের সর্ববৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্পের মূল যন্ত্রপাতি পৌঁছানো শুরু হবে।

এদিকে, ভারী যন্ত্রাংশবাহী জাহাজ যাতে প্রকল্প এলাকায় নোঙ্গর ফেলতে পারে, তাই ইতোমধ্যে পদ্মা নদীতে কার্গো টার্মিনাল (পোর্ট) নির্মাণ করা হয়েছে।

সাইফুল ইসলাম জানান, গত মাসে পোর্টের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের পোর্টে ইমিগ্রেশন অফিস তৈরি ও ভারী ক্রেন সংযুক্ত করা হচ্ছে। রাশিয়া থেকে আসা জাহাজগুলো প্রকল্প এলাকার পোর্টে সরাসরি ইমিগ্রেশন করবে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক এস জি লেসতজকিন এক বিবৃতিতে জানান, প্রকল্প এলাকায় নবনির্মিত কার্গো টার্মিনাল দিয়ে রিয়্যাক্টর প্রেশার ভেসেল, স্টিম জেনারেটর বহনকারী ভেসেল ও পোলার ক্রেন সরাসরি প্রকল্প এলাকায় পৌঁছাবে।

বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির মধ্যেও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ থেমে নেই বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের কর্মকর্তারা। তারা আরও জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেশের সর্ববৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্পটির কাজ শেষ করতে সময়সূচী অনুযায়ী সব কাজ চলেছে।

উল্লেখ্য, রাশিয়ার সহযোগিতায় পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি পারমানবিক চুলা স্থাপন করা হচ্ছে, যা থেকে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে। প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার দেশের সর্ববৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্পের আর্থিক এবং কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করছে রাশিয়া।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে রাশিয়ান প্রযুক্তিতে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে থ্রি প্লাস জেনারেশনের ভিভিইআর-১২০০ মডেলের দুটি রিয়্যাক্টর বসানো হবে। ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে প্রকল্পের ইউনিট-১ এবং ইউনিট-২ এর উৎপাদন শুরু হবে ২০২৪ সালে।

Comments