২০ বছর পর বাবা-মাকে ফিরে পেলেন হারিয়ে যাওয়া আসমা

হারিয়ে যাওয়ার ২০ বছর পর পরিবারের কাছে ফিরে এসেছে আসমা। ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা থেকে হারিয়ে যাওয়া ছোট্ট আসমা জীবনের নানা প্রতিঘাত পেরিয়ে পরিবার ফিরে পেয়েছেন।
রোববার বিকেলে আসমাকে তার পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত

হারিয়ে যাওয়ার ২০ বছর পর পরিবারের কাছে ফিরে এসেছে আসমা। ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা থেকে হারিয়ে যাওয়া ছোট্ট আসমা জীবনের নানা প্রতিঘাত পেরিয়ে পরিবার ফিরে পেয়েছেন।

আজ রোববার দুপুরে নোয়াখালী পৌরসভার বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল হোসেন কচি পৌর কনভেনশন সেন্টারে আনুষ্ঠানিকভাবে জোহরা খাতুন আসমাকে তার পরিবারের লোকজন মা, ভাই ও বোনের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এ সময় আসমাকে ফিরে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা রোকাইয়া বেগম, বোন রানু বেগম ও আসমা।

পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন হারিয়ে যাওয়া আসমা। ছবি: সংগৃহীত

হারিয়ে যাওয়া আসমা উপাখ্যান

বাংলা সিনেমার নায়ক-নায়িকাদের আজগুবি হারিয়ে যাওয়া ও ফিরে পাাওয়র গল্প নিয়ে অনেক হাসি ঠাট্টা হয়। এবার শুনুন এক সত্যিকারের হারিয়ে যাওয়া ও ফিরে পাওয়ার গল্প। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার নড়োই গ্রামের রোকাইয়া বেগমের মেয়ে আসমা। আজ থেকে ২০ বছর আগে ২০০১ সালে চট্টগ্রামে হারিয়ে যাওয়া আসমা নামের শিশুকে একটি পরিবার বাসায় কাজ করাতে রাস্তা থেকে নিয়ে যায়। একদিন মারধর করলে সে আবার রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে। পরে নোয়াখালীর ফেরদৌসী কান্নারত আসমাকে কয়েকদিন নিজের হেফাজতে রাখেন। কিন্তু, কেউ খোঁজ খবর করছে না দেখে তিনি আসমাকে নিয়ে আসেন নিজের এলাকা নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাসপুর গ্রামে। তারপর নিয়তি তাকে বিভিন্ন জায়গায় টেনে নিয়েছে।

পাঁচ বছর ছিল নোয়াখালীর টেলিফোন বিভাগের কর্মকর্তা ফরহাদ কিসলুর বাসায়। এরপর আরও দুই বাসায় ছয় বছর থেকে পুনরায় ফরহাদ কিসলুর বাসায় ফিরে আসে। ফরহাদ কিসলুর স্ত্রী ফাতেমা জোহরা সীমা আসমাকে তার বাবার বাড়ি একলাসপুরে পাঠিয়ে দেন। তখন ফাতেমা জোহরা সীমার বাবার বাড়িতে গৃহ নির্মাণের কাজ চলছিল।

আসমা বিয়ে করেন এক নির্মাণ শ্রমিককে। সেখানে তিন বছরের দাম্পত্য জীবনে এক কন্যা সন্তানের জন্ম জননী তিনি। হঠাৎ স্বামী প্রবাসে চলে গেলে আবার নোয়াখালীতে ফিরে আসেন আসমা। পুনরায় আশ্রয় নেন ফরহাদ কিসলুর বাসায়।

এবার জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ফিরে আসা আসমার শেকড়ের খোঁজে ফরহাদ কিসলুর সহধর্মিণী সীমা স্থানীয় সাংবাদিক মেজবাহ উল হক মিঠুর সহযোগিতা চান। আসমার ঠিকানা নড়াই গ্রাম,  ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা এটুকু সূত্র ধরে সাংবাদিক মিঠু ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নবীনগরের বিটিভি ও ইত্তেফাক প্রতিনিধির মাধ্যমে তৃতীয়বারের প্রচেষ্টায় খুঁজে পান আসমার পরিবারকে।

স্থানীয় সংগঠক সুমন নুর জানান, শুক্রবার  ইমোতে ভিডিও কলে কথা হয় আসমার মা ও ভাইয়ের সঙ্গে। হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে দেখে আসমার মা, বোন আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

5h ago