ধসে যাচ্ছে লালমনিরহাটে তিস্তার বাম তীরের বাঁধ
তিস্তা নদীর অনবরত ভাঙনে ধসে যাচ্ছে তিস্তার বাম তীরের সলেডি স্পার বাঁধটি। লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের গোবর্ধান এলাকার এই বাঁধটি রক্ষায় স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন শত শত গ্রামবাসী। বাঁধটিতে ভাঙন অব্যাহত থাকায় ভিটেমাটি, আবাদি জমি, ফলের বাগান ও স্থাপনা হারানোর হুমকিতে পড়েছেন কয়েক গ্রামের পাঁচ সহস্রাধিক পরিবার। এসব পরিবারে এখন কাটছে নির্ঘুম রাত।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল কাদের দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এক হাজার মিটার বাঁধটির প্রায় সাড়ে তিন শ মিটারে দেখা দিয়েছে ভাঙন। বেশিরভাগ অংশই ধসে গেছে তিস্তা নদীতে। যেকোনো সময় বাঁধটি সম্পূর্ণ ধসে যেতে পারে। আর বাঁধটি ক্ষতির মুখে পড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গ্রামবাসী।’
‘বাঁধটি ধসে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষায় স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন শত শত গ্রামবাসী। দিনভর তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সহযোগিতা করছেন। ভাঙনকবলিত স্থানে চার হাজার জিও ব্যাগে বালু ভর্তি করে ফেলা হয়েছে। কিন্তু, তাও ভাঙন থামছে না। বাঁধটিতে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে এবং ভাঙন ঠেকানোর কাজও অব্যাহতভাবে চলছ’, বলেন তিনি।
স্থানীয় গ্রামবাসী সেকেন্দার আলী (৬৭) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শুস্ক মৌসুমে বাঁধের উজানে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় গোবর্ধান এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রক বাঁধটি ক্ষতির মুখে পড়েছে। বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বাঁধের ভাটিতে বসবাসরত পাঁচ হাজারের বেশি পরিবারকে হারাতে হবে বসতভিটা। তিস্তার গর্ভে চলে যাবে তাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন, আবাদি জমি ও ফলের বাগান।’
সলেডি স্পার বাঁধটি তিস্তার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে, তাই দুশ্চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ। নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়েছেন তারা। কাটছে নির্ঘুম রাত। পরিবার-পরিজন নিয়ে তিস্তাপাড়ে বসে ভাসছেন অশ্রুতে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুরো সরকারের কাছে ত্রাণ চায় না। তাদের একটাই দাবি, তিস্তার বাম তীরে যেন টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হয়।
Comments