নোয়াখালীতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ

৯ আসামি দেলোয়ার বাহিনীর সদস্য, দেলোয়ারের নির্দেশে ঘটনা: র‍্যাব

মামলায় নাম নেই দেলোয়ারের
নারায়ণগঞ্জে র‍্যাবের অভিযানে নোয়াখালীতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় আটক করা হয় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারসহ মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন বাদলকে। ছবি: স্টার

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় হওয়া মামলার ৯ আসামিই দেলোয়ার বাহিনীর সদস্য এবং দেলোয়ারের নির্দেশেই এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১১)।

আজ সোমবার র‍্যাবের বিশেষ অভিযানে দেলোয়ারসহ মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারের পর একথা জানায় র‍্যাব।

দুপুরে নারায়ণগঞ্জের আদমজী এলাকায় র‌্যাব-১১ এর কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল খন্দকার সাইফুল আলম জানান, গোপন তথ্যে র‌্যাব-১১ এর বিশেষ দল ভোর আড়াইটায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন শিমরাইল এলাকায় নোয়াখালী টু ঢাকাগামী বাসে তল্লাশি করে। এসময় নারী নির্যাতনের ঘটনায় সম্পৃক্ত দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেনকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে ১টি পিস্তল, ১টি ম্যাগাজিন ও ২ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়।

পরে তার দেওয়া তথ্যে অভিযান চালিয়ে ভোর সাড়ে ৫টায় ঢাকার কামরাঙ্গীচর ফাঁড়ি এলাকার একটি প্লাস্টিক কারখানায় আত্মগোপনে থাকা নারী নির্যাতন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন বাদলকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়।

লে. কর্ণেল খন্দকার সাইফুল আলম আরও বলেন, ‘আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়,  গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে ঘটনার ভিডিও ধারণ করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি ও অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। রাজি না হওয়ায় গতকাল ৪ অক্টোবর ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে সারাদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।’

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘দেলোয়ার বাহিনী ওই এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত এবং দেলোয়ার এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের ভয়ে এলাকার লোকজন ভীত-সন্ত্রস্ত। দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে দুটি হত্যা মামলা আছে। দেলোয়ারের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি অবৈধ। এটি দিয়েই মূলত এলাকায় মানুষকে ভয় দেখাত।

তিনি জানান, দেলোয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হবে এবং নূর হোসেন বাদলকে বেগমগঞ্জ থানায় পাঠানো হবে।

এছাড়া ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরিয়ে দেয়ার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই ঘটনায় জড়িত অন্যান্য অপরাধীদের গ্রেপ্তারে র‌্যাবের অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি। 

রাজনৈতিক পরিচয় কী কিংবা ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত কিনা? জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা কোন পরিচয় জানতে চাই না আর খুঁজবো না। সে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, এটাই বড় পরিচয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদ করলে সব বের হয়ে আসবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ভিডিওতে যারা ছিল তারা সবাই দেলোয়ার বাহিনীর সদস্য। তারা একসাথে চলাফেরা করে বিভিন্ন অপকর্ম করে। ধারণা করা হচ্ছে শ্লীলতাহানির জন্য তারা সেখানে গিয়েছিল। পরবর্তী তদন্তে বিস্তারিত বের হয়ে আসবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক র‌্যাবের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দেলোয়ার ওই নারীকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করে আসছিল। মামলায় যে ৯ জনের নাম এসেছে সবাই দেলোয়ার বাহিনীর সদস্য। মামলায় নাম না থাকলেও আরও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে দেলোয়ার কীভাবে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত।’

Comments

The Daily Star  | English

Dengue cases see sharp rise in early July

Over 1,160 hospitalised in first 3 days, total cases cross 11,000

13h ago