বিতর্কে মুখোমুখি মাইক পেন্স-কমলা হ্যারিস
যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে নির্বাচনী বিতর্কে মুখোমুখি হয়েছেন দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মাইক পেন্স ও কমলা হ্যারিস।
গতকাল বুধবার রাতে উতাহ অঙ্গরাজ্যের সল্ট লেক সিটিতে বিতর্কে মুখোমুখি হন তারা।
এই বিতর্ক অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইউএসএ ট্যুডের সাংবাদিক সুসান পেজ।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ট্রাম্প প্রশাসন কীভাবে সাড়া দিয়েছে এবং কী ব্যবস্থা নিয়েছে সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েই নিজের বক্তব্য শুরু করেন ট্রাম্পের রানিং মেট ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।
তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রথম দিন থেকেই আমেরিকানদের স্বাস্থ্যকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে আসছেন।’
তিনি জানান, দেশের জন্য ট্রাম্প যা করেছেন তা অন্য আর কোনও প্রেসিডেন্ট করেননি। তিনি চীনের সঙ্গে সব ধরনের ভ্রমণ বাতিল করেছেন। অথচ চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ।
মাইক পেন্স বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশি মৃত্যু হতে পারত। কিন্তু ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের কারণে অনেক বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।’
এর প্রতিক্রিয়ায় ডেমোক্র্যাটিক পার্টি মনোনীত ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যর্থ’ প্রেসিডেন্ট বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘কোনও মার্কিন প্রশাসনের ব্যর্থতার সাক্ষী আমেরিকার জনগণ। ট্রাম্প প্রশাসন জানত যে করোনাভাইরাস কতটা বিপদজনক এবং এর হুমকি কতটা। কিন্তু তারা এটা ধামাচাপা দিয়েছে।’
বাইডেন এক্ষেত্রে আলাদা বলে জানান কমলা হ্যারিস। তিনি জানান, করোনা পরীক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাইডেনের একটি জাতীয় কৌশল থাকতো, যার ফলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতো।
বিতর্কের সঞ্চালক কমলা হ্যারিসকে জিজ্ঞাসা করেন, নির্বাচনের আগে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন প্রস্তুত হলে তিনি তা নেবেন কিনা। উত্তরে ক্যালিফোর্নিয়া সিনেটর হ্যারিস জানান, তিনি চিকিত্সকদের অনুমোদন ছাড়া ট্রাম্পের ভ্যাকসিন গ্রহণ করবেন না।
প্রতিক্রিয়ায় পেন্স বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভ্যাকসিন বিতরণ হলে সেটার প্রতি জনসাধারণের আস্থা কমানোর প্রয়োজন নেই বলে মনে করি। সিনেটর, আমি আপনাকে কেবল অনুরোধ করবো, মানুষের জীবন নিয়ে রাজনীতি করা বন্ধ করুন।’
গত ২৯ সেপ্টেম্বর ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বিতর্কটিকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বিশৃঙ্খল বিতর্ক হিসেবে বর্ণনা করছেন অনেকে।
দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মাইক পেন্স ও কমলা হ্যারিসের মুখোমুখি বিতর্কের প্রথম দিকে কিছুটা উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হলেও সামগ্রিকভাবে এটি বেশ শান্ত ও সুশৃঙ্খল ছিল।
বর্ণবৈষম্যের প্রশ্নে মাইক পেন্স মিনেসোটায় জর্জ ফ্লয়েড হত্যার ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এটি দাঙ্গা ও লুটপাটের কোনও অজুহাত না।’
তিনি হলে উপস্থিত এক অতিথির দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘ফ্লোরা ওয়েস্টব্রুকস, একজন কৃষ্ণাঙ্গ নারী। তার হেয়ার স্টুডিওটি মিনিয়াপলিসে বিক্ষোভের সময় ধ্বংস করা হয়।’
প্রতিক্রিয়ায় মিসেস হ্যারিস বলেন, ‘গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ৭০ মিলিয়ন আমেরিকানের সামনে বিতর্ক মঞ্চে শ্বেতাঙ্গদের আধিপত্যবাদের নিন্দা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।’
উত্তরে পেন্স বলেন, ‘এটি সত্য নয়।’
পেন্স জানান, যখন কমলা হ্যারিস সান ফ্রান্সিসকোতে প্রসিকিউটর ছিলেন তখন আফ্রিকান আমেরিকানরা শ্বেতাঙ্গ বা লাতিনদের তুলনায় ছোটখাটো মাদক অপরাধের জন্য ৯০ শতাংশ বেশি আইনি মামলার মুখোমুখি হয়েছেন।
Comments