ভাঙনের কবলে দেশের সর্ববৃহৎ বীজ উৎপাদন খামার

ভাঙনের কবলে পড়েছে দশমিনা বীজ উৎপাদন খামার। পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর তীরবর্তী দেশের সর্ববৃহৎ এই খামারে বিভিন্ন জাতের ধানের বীজ উৎপাদনের পাশাপাশি তা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যেই খামারের ২৫৬ একর জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যা মোট জমির এক-চতুর্থাংশ।
Dasmina_Seed_17Oct20.jpg
ভাঙনের কবলে পড়েছে দশমিনা বীজ উৎপাদন খামার | ছবি: স্টার

ভাঙনের কবলে পড়েছে দশমিনা বীজ উৎপাদন খামার। পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর তীরবর্তী দেশের সর্ববৃহৎ এই খামারে বিভিন্ন জাতের ধানের বীজ উৎপাদনের পাশাপাশি তা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যেই খামারের ২৫৬ একর জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যা মোট জমির এক-চতুর্থাংশ।

দেশের দক্ষিঞ্চালের জেলাগুলোকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে উপজেলার চর বাশঁবাড়িয়া এলাকায় এক হাজার ৪৪ দশমিক ৩৩ একর জমিতে প্রায় ২৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে খামারটি গড়ে তোলা হয়। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীজ উৎপাদন খামার প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।

খামার কর্তৃপক্ষ জানায়, পটুয়াখালীতে প্রতিকূল সহিষ্ণু প্রজাতির বীজ উৎপাদানের লক্ষ্যে শুরুতে দুটি ট্রাক্টর দিয়ে খামার প্রকল্প এলাকায় চাষাবাদ শুরু করা হয়। পরবর্তীতে অফিস ভবন, গুদাম ঘরসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, ভূমি উন্নয়ন ও খাল খনন করা হয়। এ ছাড়া, প্রকল্পে ট্রাক্টরসহ আনুসঙ্গিক যন্ত্রপাতি কেনা করা হয়। ২০১৭ সালের ৩০ জুন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। ১ জুলাই থেকে এই বীজ উৎপাদন খামারটি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে আসছে।

সম্প্রতি বীজ উৎপাদন খামারে গিয়ে দেখা যায়, তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে খামারের পশ্চিম ও উত্তরাংশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবাদযোগ্য জমির পাশাপাশি নদী ভাঙনে ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে খামারে চলাচলের জন্য নির্মিত ইটের তৈরি সড়ক। হুমকির মুখে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো।

কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, খামারটিতে তিন জন কর্মকর্তাসহ ১৮টি পদ রয়েছে। কাজ করছেন মাত্র তিন জন কর্মকর্তা। ১৫ কর্মচারীর পদ শূন্য। প্রতিদিন কমপক্ষে দুই শতাধিক শ্রমিক চুক্তি ভিত্তিতে কাজ করছেন। নানা প্রতিকূলতা থাকলেও প্রতি বছরই এই খামারে উৎপাদন বাড়ছে।

খামারের তথ্য অনুয়ায়ী, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৮০ দশমিক ৯৭ মেট্রিক টন আমন বীজ এবং ২২৯ দশমিক ৩৬ মেট্রিক টন বোরো ও রবি শস্য এবং সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৫৫ দশমিক ৭০ মেট্রিক টন আমন বীজ এবং বোরো ও ৩১১ দশমিক ৪০ মেট্রিক টন রবি ফসলের বীজ উৎপাদিত হয়েছে।

আমন বীজের মধ্যে বিনা ধান-৭, বি আর ২২, ব্রি ধান ৪৪, ৪৯, ৭৬, ও ৭৭ এবং বোরো ধানের মধ্যে ব্রি ধান ২৮, ৫৮, ৬৭, ৭৪ ও সরগম জাতের ধানের বীজ উৎপাদন করা হচ্ছে খামারে। এর আগে গম, আলু, সূর্যমুখী, মসুর, খেসারী, মুগ, ফেলন, সয়াবিন, তিল ফসল উৎপাদন করা হতো। জোয়ারের সময় পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় বীজ উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

দশমিনা বীজ উৎপাদন খামারের উপপরিচালক শেখ ইকবাল আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ভাঙন অব্যাহত আছে। পাশাপাশি বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে খামারটি। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিএডিসি’র ঊর্ধবতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

8h ago