যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি অগ্রাহ্য, ইরানের ওপর আরোপিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের ওপর আরোপিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে বলে দাবি করেছে তেহরান।
আজ রোববার এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মেয়াদ শেষ হওয়ায় আজ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে।
আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের জোরালো তৎপরতা সত্ত্বেও ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো হয়নি।
তেহরানের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ২০১৫ সালে ইরানের সই করা পরমাণু সমঝোতা ও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব অনুযায়ী ১৮ অক্টোবর ইরানের ওপর থেকে জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে।
এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার অর্থ হলো, এখন কোনও আইনগত বাধা ছাড়াই ইরান যেকোনো দেশের কাছ থেকে মিসাইল, হেলিকপ্টার, ট্যাঙ্কসহ প্রচলিত অস্ত্র কিনতে ও বিক্রি করতে পারবে।
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে জিসিপিওএ চুক্তি থেকে সরে এসে ইরানের উপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বহার রাখতে তাদের ক্ষমতার প্রতিটি উপায় কাজে লাগিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা, এমনকি ট্রাম্প-পম্পেও ২০১৯ সাল থেকে বারবার কিছু দাবি তুলে ইরানের বিরুদ্ধে এক ধরনের শীতল যুদ্ধ চালিয়েছেন।
গত আগস্টে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ অনির্দিষ্টকালের জন্য বাড়াতে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবনা তোলে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন দুই দেশ, চীন ও রাশিয়া এ প্রস্তাবনার ঘোর বিরোধিতা করে।
নিরাপত্তা পরিষদের ১৪ সদস্যের মধ্যে ফ্রান্স, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যসহ আরও আট সদস্য দেশ প্রস্তাবনাটি এড়িয়ে যায়। কেবলমাত্র ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রই যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে সমর্থন জানায়।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে ইরান বিরোধী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্র কেনা-বেচা ও ভূরাজনীতি আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে।
Comments