জাল টাকাসহ সপ্তমবারের মতো গ্রেপ্তার হুমায়ুন
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জাল টাকা তৈরির মিনি কারখানায় অভিযান চালিয়ে ৪৯ লাখ জাল টাকাসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে অভিযানটি চালানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার চার জন হলেন— হুমায়ুন কবির (৪৭), জামাল উদ্দিন (৪২), তাসলিমা আক্তার (৩০) ও সুখী আক্তার (৩০)। এদের মধ্যে কারখানাটির মালিক হলেন হুমায়ুন। এ নিয়ে তাকে সপ্তমবারের মতো গ্রেপ্তার করা হলো।
বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন ডিবি পুলিশের (গুলশান বিভাগ) উপপুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান।
তিনি জানান, মোহাম্মদপুর থানাধীন নূরজাহান রোডের ছয়তলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় অভিযান চালিয়ে জাল টাকা তৈরির একটা মিনি কারখানার সন্ধান পাওয়া যায়। সেখান থেকে দুই নারীসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে কারখানাটির মালিক হুমায়ুনকে এর আগেও ছয় বার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আর জামালের নামের দুইটি মামলা রয়েছে।
উপপুলিশ কমিশনার জানান, চক্রটি সারা বছর ধরেই জাল টাকা তৈরি করলেও দুর্গা পূজা উপলক্ষে বেশ কয়েকদিন ধরে বেশি পরিমাণে জাল টাকা তৈরির কাজ করে আসছিল। জাল টাকা তৈরি করার জন্য বিশেষ ধরনের কাগজ তৈরি, তাতে বিভিন্ন ধরনের আঠা, নিরাপত্তা লাগানো এবং প্রিন্টেড নোটগুলোকে সাইজ অনুসারে কাটার জন্য হুমায়ুন ওই দুই নারীকে ১৫ ও ১০ হাজার টাকায় চাকরি দিয়েছিলেন। চক্রটি ঢাকায় বসে জাল টাকা উৎপাদন করলেও চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলাতে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে ১০ হাজার টাকায় প্রতি বান্ডেল জাল টাকা বিক্রি করতেন।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত তাসলিমার স্বামী সাইফুল ইসলাম গত জানুয়ারি মাসে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে আছেন। কারখানাটির মালিক হুমায়ুন দেড় বছর আগে জেল থেকে জামিনে এসে বড় আকারের জাল টাকার কারখানা স্থাপন করছে। তার আরেক ভাই কাওসারও জাল টাকার কুখ্যাত ব্যবসায়ী। বর্তমানে তিনি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
ডিবি জানায়, অভিযানকালে গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে দুইটি ল্যাপটপ, চারটি প্রিন্টার, কয়েকটি কাটার, অনেকগুলো স্ক্রিন, ডাইস, নিরাপত্তা সুতা, বিভিন্ন রঙের কালি, আঠা, বিপুল পরিমাণের জলছাপযুক্ত বিশেষ কাগজ, বিপুল পরিমাণে অন্যান্য সামগ্রী ও সফট ডাটা/ কপি উদ্ধার করা হয়। যা দিয়ে আনুমানিক চার কোটি জাল টাকা তৈরি করা সম্ভব। বাসার বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রাখা অবস্থান থেকে আসামিরা বিপুল পরিমাণ জাল নোটের বান্ডেল বের করে। উদ্ধারকৃত জাল টাকার পরিমাণ ৪৯ লাখ টাকা।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানিয়েছে ডিবি।
Comments