হবিগঞ্জের খোয়াই নদী রক্ষায় ৬ দাবি

বাপা ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপারের স্মারকলিপি
অবৈধ দখল, ভরাট ও দূষণের কারণে পুরাতন খোয়াই নদীর অস্তিত্ব চরমে সংকটে। ছবি: স্টার

পুরাতন খোয়াই নদীর পূর্ণাঙ্গ সীমানা চিহ্নিতকরণ, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পুনরায় চালু, সংরক্ষণ ও সৌন্দর্যবর্ধনের দাবিতে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার।

আজ সোমবার বাপা’র একটি প্রতিনিধিদল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ওই স্মারকলিপি দেন। জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান স্মারকলিপি গ্রহণ করেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, হবিগঞ্জ শহরের জলাবদ্ধতা নিষ্কাশনের সবচেয়ে বড় জলাধার পুরাতন খোয়াই নদী। মাছুলিয়া থেকে হরিপুর-নাতিরাবাদ হয়ে মাছ বাজার পর্যন্ত পুরাতন খোয়াই নদীর দৈর্ঘ্য ৫ কিলোমিটার। বর্ষা মৌসুমে শহরের বৃষ্টির পানি ধারণ ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় পুরাতন খোয়াই নদীর ভূমিকা অপরিসীম। যে কোনো নগরে বারিপাত অঞ্চল বা ‘রিটেনশন পন্ড’ হচ্ছে ওই নগরে অবস্থিত প্রাকৃতিক জলাশয়সমূহ। পুরাতন খোয়াই নদী হবিগঞ্জের অন্যতম জলাধার। এই শহরের জন্য তাই পুরাতন খোয়াই নদী পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া এই শহরের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যবর্ধণের সঙ্গে পুরাতন খোয়াই নদী একইসূত্রে গাঁথা।

তবে, দুঃখজনক হলেও সত্য কিছু স্বার্থান্বেষী মহল নদীটিকে অব্যাহতভাবে দখল করার কারণে এর শেষ চিহ্ন মুছে যেতে চলেছে। দীর্ঘদিন ধরে ভূমি দখলকারীদের অবৈধ দখল, ভরাট ও দূষণের কারণে পুরাতন খোয়াই নদীর অবস্থা চরমে সংকটে পৌঁছেছে।

২০১৯ এর সেপ্টেম্বরে এই নদীর সীমানা নির্ধারণ ও উভয় পাড়ের অবৈধ স্থাপনা দখল উচ্ছেদ প্রক্রিয়া চালু হয়েছিল প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তখন ‘মাছুলিয়া থেকে শায়েস্তানগর’ পর্যন্ত এক কিলোমিটার এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও বর্তমানে তা বন্ধ আছে। অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল পুরাতন খোয়াই নদী সম্পূর্ণ দখলমুক্ত করে সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে।

বাপা সদস্য এডভোকেট বিজন বিহারী দাস বলেন, ‘স্মারকলিপিতে ছয়টি দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে পুরাতন খোয়াই নদী থেকে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে এবং নদী দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যথাযথভাবে পূর্ণাঙ্গ সীমানা নির্ধারণ ও আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী স্থায়ী সীমানা চিহ্নিত করতে হবে। পুরাতন খোয়াই নদীকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে দ্রুত খনন করতে হবে। নদী পাড়ে ঘাস লাগানো গাছ রোপন, মানুষের বসার স্থান নির্মাণ করতে হবে। উদ্ধারকৃত অংশ দ্রুত খননের আওতায় আনতে হবে। মাছুলিয়া থেকে মাছ বাজার পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ পুরাতন খোয়াই নদী প্রকল্পের আওতায় আনতে হবে। পুরাতন খোয়াই নদী পুনরুদ্ধারে অংশগ্রহণমূলক ও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। নদী রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনগণকে সম্পৃক্ত করে বিজ্ঞানসম্মতভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। খোয়াই নদী সংশ্লিষ্ট গৃহীত প্রকল্প সম্পর্কে আমরা বিশদভাবে জানতে এবং মতামত দিতে চাই।’

স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন বাপা হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল, আমিনুল ইসলাম এবং মো. আবিদুর রহমান।

Comments

The Daily Star  | English

How frequent policy shifts deter firms from going public

If a company gets listed, it will enjoy tax benefits, and this is one of the major incentives for them to go public..However, the government’s frequent policy changes have disheartened listed firms many times, as they faced higher tax rates once they got listed..It gave a clear, nega

2h ago