হবিগঞ্জে পরিবহন ধর্মঘট: বিপাকে শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষ

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ পয়েন্টে অপেক্ষা করা সাজেদ মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ বেকায়দায় পড়েছেন। দুপুরে ইন্টারভিউ ছিল। কিন্তু, ধর্মঘটের কারণে যেতে পারিনি।’
পরিবহন ধর্মঘট। ছবি: স্টার

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ পয়েন্টে অপেক্ষা করা সাজেদ মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ বেকায়দায় পড়েছেন। দুপুরে ইন্টারভিউ ছিল। কিন্তু, ধর্মঘটের কারণে যেতে পারিনি।’

‘করোনার কারণে আমার চাকরি চলে গেছে। অনেকদিন পরে ইন্টারভিউর ডাক পেয়েছিলাম। তাতেও সুযোগ পেলাম না’, বলছিলেন সাজেদ মিয়া।

আরেকজন যাত্রী পোশাক কারখানার শ্রমিক হোসনা বেগম বলেন, ‘শ্রীমঙ্গল উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা বুনভীর থেকে খুব ভোরেই মা, আমি ও তিন সন্তানকে নিয়ে এসেছিলাম ঢাকায় যাব বলে। ভোর থেকে এখানেই বসে রয়েছি।  কত সময় বসে থাকতে হবে জানি না।’

শুধু তারাই নয়, তাদের মতো অনেক যাত্রীই শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ পয়েন্টে যানবাহন ধর্মঘটের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষেরা। অনেকেরই কর্মস্থলে পৌঁছাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য হবিগঞ্জ জেলার সব সড়কে পরিবহন ধর্মঘটের আহ্বান করা হয়েছে।

ফলে আজ থেকে ঢাকা ও সিলেটসহ সারা দেশের সঙ্গে হবিগঞ্জের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকবে। গতকাল রাতে সংগঠনের কার্যালয়ে এক জরুরি সভায় হবিগঞ্জ জেলা মোটর মালিক গ্রুপ এ ধর্মঘট আহ্বান করে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধের দাবিতে এ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়।

হবিগঞ্জ জেলা মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক শঙ্ক শুভ্র রায় দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন চলাচল করছে। ফলে মহাসড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। পাশাপাশি বাহুবল উপজেলার মিরপুর পয়েন্ট ও শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ পয়েন্টে অবৈধ গাড়ির শ্রমিকদের অত্যাচারে সংগঠনের আওতাধীন বাসসহ সব যানবাহনের শ্রমিকরা নিরাপদে-নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারছেন না।

‘এ বিষয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা না নেওয়ায় শ্রমিকরা পরিবহন ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেন। ধর্মঘট পালনকালে সংগঠনের আওতাধীন সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে’, বলেন তিনি।

তিনি আরও জানান, হবিগঞ্জ-সিলেট ও আঞ্চলিক সড়কগুলোতে প্রতিদিন তাদের সমিতির ২৭৮টি বাস চলাচল করে। এক দিনে তারা ২০ হাজারেরও বেশি যাত্রী পরিবহন করে থাকে। ধর্মঘট চলতে থাকলে মালিক-শ্রমিকরা দিনে দুই কোটি টাকা লোকসান গুনবেন। তারপরও অনুমতিহীন গাড়ি বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত এ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে না।

জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. সজিব আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকসহ (টমটম) অবৈধ যানবাহন মহাসড়কে চলাচল বন্ধের দাবিতে গত ১৩ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, কোনো কাজ হয়নি। এজন্য আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। আগামীকাল থেকে প্রয়োজনে ট্রাকও বন্ধ করে দেওয়া হবে।’

হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ধর্মঘট পালনকারীদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আজ বিকেল ৪টার দিকে তাদের সঙ্গে আমরা বসব।’

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago