চীনকে চ্যালেঞ্জ করে মালাবারে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের নৌ মহড়া

যুক্তরাষ্ট্রে রণতরী ইউএসএস নিমিটজ এর নেতৃত্বে ২০১৭ সালের মালাবার মহড়ায় ভারতীয় নৌবাহিনী, জাপান মেরিটাইম সেলফ ডিফেন্স ফোর্স ও ইউএস নেভি। ফাইল ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সঙ্গে ভারতের মালাবার নৌ মহড়ায় অস্ট্রেলিয়ার যুক্ত হওয়াকে চীনের প্রতি এই চার দেশের চ্যালেঞ্জের প্রতিফলন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, ক্যানবেরার কয়েক দফা অনুরোধ এবং এ বিষয়ে ওয়াশিংটন ও টোকিওর লবিংয়ের পর গতকাল নয়াদিল্লি নভেম্বরে হতে যাওয়া মালাবার নৌ মহড়ায় অস্ট্রেলিয়াকে আমন্ত্রণ জানায়।

এর আগে, এ মাসের প্রথম সপ্তাহে চীনের ক্রমবর্ধমান শক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ‘কোয়াড’ নামে পরিচিত আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও জাপান।

অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডিফেন্স স্টাডিজ সেন্টারের অধ্যাপক জন ব্লাজল্যান্ড বলেন, 'এখানে একটি সাধারণ কারণ আছে, যা বোঝা মুশকিল না। যা এই দেশগুলো তাদের অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ কাটিয়ে উঠতে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চাইছে।'

ব্লাজল্যান্ড মনে করেন, চীন নিজেই এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। তিনি বলেন, 'এর "যুদ্ধংদেহী" কূটনীতি, দক্ষিণ চীন সাগরের বিষয়ে আলোচনায় অনাগ্রহ, ভারত মহাসাগর জুড়ে ও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এর দৃঢ় অবস্থান, সবই যথেষ্ট অস্থিরতা তৈরি করেছে এবং চীনের জনপ্রিয়তা কমিয়ে দিয়েছে।'

রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান নেভির সাবেক রিয়ার অ্যাডমিরাল জেমস গোল্ড্রিকও ব্লাজল্যান্ডের মতামতের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।

তিনি বলেন, 'বাস্তবতা হলো আঞ্চলিক অংশীদারীত্বের ভিত্তিতে "কোয়াড" এর মতো জোট তৈরি হলে, এগুলোর কর্মকাণ্ড সরাসরি চীনের আচরণের গতিধারার উপর নির্ভর করবে।'

তিনি আরও বলেন, 'যদি চীন তার বর্তমান পথে চলতে থাকে, তবে আমি বিশ্বাস করি যে এ অঞ্চলের দেশগুলোর যে সব বিষয়ে স্বার্থ আছে এবং যখন এই স্বার্থ হুমকির সম্মুখীন হবে, সে সব বিষয়ে তারা জোট গঠন করে একসঙ্গে কাজ করার উপায় খুঁজবে।'

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস পেইন সোমবার বলেন, বর্ধিত এই মহড়া চার দেশের এ অঞ্চলে 'শান্তি ও স্থিতিশীলতা' বজায় রাখার জন্য একসঙ্গে কাজ করার সক্ষমতা জোরদার করবে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, মহড়ায় অংশগ্রহণকারীরা সমুদ্র সীমায় 'সুরক্ষা ও নিরাপত্তা' বাড়াতে সহযোগিতা করবে। তারা একটি 'মুক্ত, স্বাধীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক' এবং 'নিয়মতান্ত্রিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা'কে সমর্থন করছে।

জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে গণতান্ত্রিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ২০০৭ সালে প্রথম 'কোয়াড' গঠনের কথা ভাবেন। সূচনা পর্বে মাত্র এক দফা সংলাপ ও একবারই দেশগুলো যৌথ মহড়া করেছিল।

এ অঞ্চলে মজুদ থাকা গ্যাস ও তেল এবং বিশ্বব্যাপী নৌপরিবহনের এক তৃতীয়াংশ পথের ৮০ শতাংশেরও বেশি দাবি চীনের। চীনের এ আধিপত্যবাদ ও দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সামরিক অবস্থানের ফলে ২০১৭ সালে দেশগুলো আবার আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সমন্বয়ের আহ্বান জানিয়ে একত্রিত হয়।

ভারতীয় নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কমোডোর ও দিল্লি পলিসি গ্রুপের সিনিয়র সহযোগী ললিত কাপুর এ বর্ধিত মহড়াকে 'ভারত, অস্ট্রেলিয়াসহ এ অঞ্চলের জন্য ইতিবাচক' বিষয় বলে উল্লেখ করেছেন।

তবে তিনি মনে করেন, বেইজিংকে তার আধিপত্যে বাধা দিতে চাইলে 'কোয়াড'কে আরও কিছু করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

First day of tariff talks ends without major decision

A high-level meeting between Bangladesh and the Office of the United States Trade Representative (USTR) ended in Washington yesterday without a major decision, despite the looming expiry of a 90-day negotiation window on July 9.

1h ago