নোয়াখালীতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: আদালতে এক আসামির আত্মসমর্পণ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে কুপ্রস্তাবে প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক নারীকে (৩৫) বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানোর ঘটনায় দায়ের করা মামলার এক আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।
আজ বুধবার দুপুরে মো. ইসরাফিল হোসেন নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
ওই আসামির নাম মো. ইসরাফিল হোসেন ওরফে মিয়া (২২)। তিনি মামলার ৪ নং আসামি। পরে তাকে ৩ নং আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক হাকিম মো. মাসফিকুল হকের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নোয়াখালী পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিই) কার্যালয়ের পরিদর্শক সিউল মোস্তফা এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে কুপ্রস্তাবে প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ঘরে ঢুকে এক নারীকে ধর্ষণচেষ্টা চালায় স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় তার স্বামীকে বেধে রেখে মারধর করা হয়। ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে তাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে।
গত ৪ অক্টোবর ওই নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার নারী ৪ অক্টোবর রাতে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে দুইটি মামলা দায়ের করেন। এতে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৭-৮ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। মো. ইসরাফিল হোসেন মিয়া ওই মামলার ৪র্থ আসামি।
এ মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মামুনুর রশিদ পাটওয়ারী ও পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে দায়ের করা মামলার ৯ আসামির মধ্যে প্রধান আসামি মিজানুর রহমান বাদল তার সহযোগী আবদুর রহিম, আবুল কালাম, মো. ইসরাফিল হোসেন, সাজু, সামসুদ্দিন সুমন, রহমত উল্যাসহ ৭ জন গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়াও, এজাহার বহির্ভূত পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
পুলিশ জানায়, পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে পিবিআইয়ের একাধিক টিম আসামিদের বাড়িঘর ও স্বজনদের বাসস্থানে অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে মামলার চতুর্থ আসামি ইসরাফিল হোসেন মিয়া বুধবার দুপুর ১২টার দিকে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালতের বিচারক মাসফিকুল হক শুনানি শেষে জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশ আরও জানায়, অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইসরাফিলের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়। কিন্তু, আজ এ ব্যাপারে শুনানি হয়নি। পরবর্তীতে এ ব্যাপারে শুনানি হবে।
পিবিআই পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি বলেন, ‘এ মামলায় এজাহার নামীয় নয় আসামির মধ্যে সাত জন গ্রেপ্তার হয়েছে। বাকি দুই আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে আছে। খুব শিগগির বাকি আসামিরা গ্রেপ্তার হবে।’
Comments