দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে রিয়ালকে হারিয়ে দিল শাখতার
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সবচেয়ে সফল দল রিয়াল মাদ্রিদের ঘরে খেলা। এর আগে বড় দুঃসংবাদ পেল শাখতার দোনেস্ক। স্কোয়াডের ১০ জন খেলোয়াড়ই কোভিড-১৯ পজিটিভ। একাদশ সাজানোই অসম্ভব। বাধ্য হয়েই ডাকলেন একাডেমীর খেলোয়াড়দের। তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া দ্বিতীয় সারির দলেই বাজিমাত। অবিশ্বাস্য এক জয়ে মাঠ ছাড়ে শাখতার।
স্তাদিও আলফ্রেদো দি স্তেফানোতে বুধবার রাতে রিয়াল মাদ্রিদকে ৩-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে শাখতার দোনেস্ক। দলের হয়ে একটি করে গোল করেছেন ম্যাতেউস তেতে ও মানর সলোমন। অপর গোলটি আসে আত্মঘাতী থেকে। রিয়ালের হয়ে গোল দুটি করেছেন লুকা মদ্রিচ ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই ব্যাকফুটে ছিল স্বাগতিকরা। যদিও বলার মতো প্রথম সুযোগটা পেয়েছিল তারাই। চতুর্থ মিনিটে মার্সেলোর পাস থেকে বাঁ প্রান্ত থেকে নেওয়া আসেনসিওর শট ঠেকিয়ে দেন শাখতার গোলরক্ষক আনাতল্লি ত্রুবিন।
ম্যাচের ১৪তম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো শাখতার। অবিশ্বাস্য এক মিস করেন মার্লোস। পাল্টা আক্রমণ থেকে নিজেদের অর্ধ থেকে মাইকনের বাড়ানো বলে গোলরক্ষক একা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বুদ্ধিদীপ্ত শট নিতে পারেননি। কর্তুয়ার বরাবর শট নিলে নষ্ট হয় সে সুযোগ।
২৯তম মিনিটে অবশ্য সফরকারীদের আটকে রাখতে পারেননি কর্তুয়া। ম্যাতেউস তেতের গোলে এগিয়ে যায় শাখতার। তবে এ গোলের মূল কারিগর ছিলেন ভিক্তর কর্নিয়েঙ্কো। রিয়ালের তিন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে তেতেকে দারুণ পাস দিয়েছিলেন তিনি। বল ধরে কোণাকোণি শটে লক্ষ্যভেদ করেন এ ব্রাজিলিয়ান।
পরের মিনিটে ভালো সুযোগ ছিল রিয়ালের। মার্সেলোর ক্রস থেকে একেবারে ফাঁকায় হেড দেওয়ার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি লুকা জোভিচ। তার দুর্বল হেড সহজেই ধরে ফেলেন গোলরক্ষক ত্রুবিন।
৩৩তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ায় শাখতার। ডান প্রান্ত থেকে তেতের নেওয়া জোরালো শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন গোলরক্ষক কর্তুয়া। তবে আলগা বল রাফায়েল ভারানের পা লেগে জালে জড়ালে দুই গোলের ব্যবধান পিছিয়ে পড়ে রিয়াল।
নয় মিনিট পর আরও একটি গোল খায় রিয়াল। মাঝমাঠ থেকে তেতের উদ্দেশ্যে বল বাড়িয়েছিলেন মানর সলোমন। ব্যাকহিল করে ফের সলোমনকে বল দেন তেতে। বল ধরে দারুণ এক কোণাকোণি শটে বল এ ইসরাইলি তারকা জালে পাঠালে তিন গোলের ব্যবধানে গিয়ে যায় সফরকারীরা।
দ্বিতীয়ার্ধের নবম মিনিটে দুর্দান্ত এক গোল দিয়ে রিয়ালকে ম্যাচে ফেরান মদ্রিচ। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে বুলেট গতির শটে লক্ষ্যভেদ করলে ব্যবধান কমায় রিয়াল। দুই মিনিট পর ব্যবধান ফের বাড়াতে পারতো শাখতার। বাঁ প্রান্ত থেকে দারুণ এক কাটব্যাক করেছিলেন করনিয়েস্কো। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে বল বাইরে মারেন তেতে।
৫৯তম মিনিটে বদলি খেলোয়াড় ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের গোলে ব্যবধান আরও কমায় রিয়াল। অবশ্য এ গোল খাওয়ার পেছনে বড় দায় রয়েছে তরুণ খেলোয়াড় ভেলেরি বন্দারের। সতীর্থকে ঠিকভাবে পাস দিতে না প্রায় বল ছিনিয়ে নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে লক্ষ্যভেদ করেন এ ব্রাজিলিয়ান।
চার মিনিট পর অবিশ্বাস্য এক মিস করেন তেতে। দেনতিনহোর বাড়ানো বলে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। শট নিতে দেরি করে ফেলেন তিনি। যা করলেন তাও গোলরক্ষক বরাবর। ফলে বড় বাঁচা বেঁচে যায় রিয়াল।
৮০তম মিনিটে আরও একটি গোল খেয়েছিল রিয়াল। অফসাইডের কারণে সে যাত্রা বেঁচে যায় রিয়াল। ম্যাচের যোগ করা সময়ে বড় নাটক হয়। সমতায় ফিরেছিল রিয়াল। কর্নার থেকে দূরপাল্লার শটে লক্ষ্যভেদ করেছিলেন ফেদে ভালভার্দে। তবে ভিএআরে বাতিল হয় সে গোল। গোলরক্ষকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকায় অফসাইড হন ভিনিসিয়ুস। ফলে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নদের।
Comments