পিছিয়ে পড়েও পোর্তোকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শুরু ম্যানসিটির

এফসি পোর্তোর বিপক্ষে দারুণ জয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শুভ সূচনা করল পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা।
man city
ছবি: রয়টার্স

অধিকাংশ সময় বল পায়ে রাখলেও ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়ল ম্যানচেস্টার সিটি। অল্পক্ষণের মধ্যে সমতায় ফেরার পর প্রতিপক্ষের ব্যর্থতা ও ভাগ্যের ফেরে ম্যাচে থাকল তারা। দ্বিতীয়ার্ধে ছন্দে ফিরে নিজেদের জাত চেনাল তারকাখচিত ইংলিশ দলটি। এফসি পোর্তোর বিপক্ষে দারুণ জয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শুভ সূচনা করল পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা।

বুধবার রাতে ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে ঘরের মাঠে ৩-১ গোলে জিতেছে ম্যানসিটি। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের হয়ে একবার করে লক্ষ্যভেদ করেন সার্জিও আগুয়েরো, ইলকাই গুন্দোগান ও ফেরান তোরেস। পোর্তোর একমাত্র গোলটি আসে লুইস দিয়াজের পা থেকে।

প্রথমার্ধে সিটির খেলায় ছিল না কোনো ছন্দ। বল দখলে দ্বিগুণেরও বেশি ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও নিশ্চিত সুযোগ তৈরিতে যোজন যোজন ব্যবধানে পিছিয়ে ছিল তারা। বরং পাল্টা আক্রমণে বারবার ভীতি ছড়ায় পোর্তো। এমনকি বিরতির আগে তারা এগিয়ে থাকতে পারত অন্তত দুই গোলের ব্যবধানে!

ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগটি থেকে গোল আদায় করে নেয় পোর্তো। পুরো কৃতিত্ব অবশ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অভিষিক্ত দিয়াজের। ১৪তম মিনিটে মাঝ মাঠে সিটি বল হারালে সতীর্থের পাস খুঁজে নেয় কলম্বিয়ার এই তরুণ ফরোয়ার্ডকে। এরপর একক নৈপুণ্যে এঁকে বেঁকে সামনে এগিয়ে তিনি ঢুকে পড়েন ডি-বক্সে। সবমিলিয়ে প্রতিপক্ষের পাঁচ ডিফেন্ডারকে দর্শক বানিয়ে নেন ডান পায়ে কোণাকুণি শট। গোলরক্ষক এদারসন ঝাঁপিয়ে পড়লেও বল ফেরানোর কোনো উপায় ছিল না তার।

man city
ছবি: রয়টার্স

লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি অতিথিরা। ছয় মিনিট পরই ভাগ্যের জোরে সমতায় ফেরে সিটিজেনরা। গুন্দোগানের শট পোস্টে লেগে ফেরার পর পোর্তোর ডি-বক্সে পেপের ফাউলের শিকার হন রহিম স্টার্লিং। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে এরপর রেফারি দেন পেনাল্টির সিদ্ধান্ত। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড আগুয়েরোর স্পট-কিক প্রায় রুখেই দিয়েছিলেন তার স্বদেশি গোলরক্ষক অগাস্তিন মার্চেসিন। বল তার হাতে লেগে মাটিতে পড়ে পৌঁছায় জালে।

দুই মিনিট পর বড় বাঁচা বেঁচে যায় সিটি। নিজেদের ডি-বক্সে বল দেওয়া-নেওয়া করে আক্রমণে ওঠার পরিকল্পনা ছিল তাদের। তবে রদ্রিকে খুঁজে পেতে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন এদারসন। তার পাস পেয়ে যান মাতেউস উরিবে। কিন্তু তাড়াহুড়ো করে শট নিয়ে সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি। বল গোলপোস্টের অনেক উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়।

৩২তম মিনিটে জাইদু সানুসির শট সহজেই লুফে নেন ব্রাজিলিয়ান এদারসন। এরপর বিরতির কিছু সময় আগে ফের গোল হজম করা থেকে রক্ষা পায় সিটি। সতীর্থের রক্ষণচেরা পাসে ডি-বক্সে বল পেয়ে গিয়েছিলেন পোর্তোর স্ট্রাইকার মোউসা মারেগা। নিজে শট না নিয়ে গোলমুখে বল ফেলেন তিনি। ততক্ষণে এদারসনও পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। তাকে ফাঁকি দিয়ে সতীর্থ এক খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে বল যাচ্ছিল ফাঁকা জালের দিকে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ব্যাক-হিল করে বল ফেরান ইংলিশ ডিফেন্ডার কাইল ওয়াকার।

ferran torres
ছবি: রয়টার্স

দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে ধার বাড়ায় সিটি। শুরু থেকেই তারা চেপে ধরে পর্তুগিজ দলটিকে। ৫০তম মিনিটে হাফ-ভলিতে মার্চেসিনের পরীক্ষা নেন জার্মান মিডফিল্ডার গুন্দোগান। এরপর ৬৫তম মিনিটে তার গোলেই এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ডি-বক্সের বাইরে বিপজ্জনক জায়গায় ফাউলের শিকার হওয়ার পর পাওয়া ফ্রি-কিকে দারুণ দক্ষতায় লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।

৭৩তম মিনিটে সিটিকে ফের উল্লাসে মাতান তোরেস। বদলি হিসেবে মাঠে নামার মিনিট পাঁচেকের মধ্যে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। আরেক বদলি ফিল ফোডেনের সঙ্গে বল আদান-প্রদান করে ডি-বক্সে ঢুকে যান তিনি। পিছলে যাওয়ার আগে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে নেন বাঁকানো শট। তাতে পরাস্ত হন মার্চেসিন।

৭৮তম মিনিটে মারেগার দূরপাল্লার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে গোল শোধ করা হয়নি পোর্তোর। চার মিনিট পর হতাশ করেন সিটির ফরোয়ার্ড রিয়াদ মাহরেজ। স্টার্লিংয়ের দারুণ পাসে মার্চেসিনকে একা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার প্রচেষ্টা প্রতিহত হয়। পরের মিনিটে আরেকটি অসাধারণ সেভ করেন মার্চেসিন। রদ্রির দূর থেকে নেওয়া শট তার হাতে লেগে বাধা পায় পোস্টে।

গ্রুপের আরেক ম্যাচে নিজেদের মাঠে অলিম্পিক মার্সেইকে হারিয়েছে অলিম্পিয়াকোস। ফরাসি ক্লাবটির বিপক্ষে গ্রিকরা জিতেছে ১-০ গোলে।

Comments