কৃষকের ভাগ্য বদলে দিচ্ছে আগাম আলু

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা অধিক লাভজনক আগাম আলুর চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এই আলু রোপণের ৬০ দিন পরেই উত্তোলন করা সম্ভব এবং খাবার আলু হিসেবে বিক্রি করা হয়। এ ছাড়াও, এগুলো স্বাভাবিক সময় অর্থাৎ ডিসেম্বরে বপন করে মার্চে উত্তোলন ও সংরক্ষণ করা যায়।
আলু বপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। ছবি: স্টার

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা অধিক লাভজনক আগাম আলুর চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এই আলু রোপণের ৬০ দিন পরেই উত্তোলন করা সম্ভব এবং খাবার আলু হিসেবে বিক্রি করা হয়। এ ছাড়াও, এগুলো স্বাভাবিক সময় অর্থাৎ ডিসেম্বরে বপন করে মার্চে উত্তোলন ও সংরক্ষণ করা যায়।

সাধারণত উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি যেখানে সামান্য আদরটা আছে সেখানে এই আলুর চাষ করা হয়। একইসঙ্গে যেসব জমি স্বল্পমেয়াদী আমন ধান কাটার পরে খালি হয়েছে সেসব জমিও এই আলু চাষের জন্য বেছে নেওয়া হয়।

উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এটি খুবই উৎসাহব্যঞ্জক যে, কিশোরগঞ্জের আগাম আলু মৌসুমের শুরুতেই রাজধানী সবজি বাজারগুলোতে পৌঁছে যাচ্ছে। এতে রাজধানীবাসী নতুন আলুর স্বাদ গ্রহণ করতে পারছে। গত কয়েক বছর ধরে এই রীতি চলে আসছে।’

জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহসভাপতি ফরহানুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরের ব্যবসায়ীরা আগাম নতুন আলু ক্রয়ের জন্য সরাসরি ট্রাক নিয়ে কিশোরগঞ্জের গ্রামগুলোতে হাজির হয়। আমরা তাদের সহযোগিতা করি। কারণ এখানকার আগাম আলু দেশের যে কোনো স্থানের চেয়ে আগে উৎপাদিত হয় এবং তা এলাকায় অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।’

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষে চতুর্থ দফা বন্যার কারণে আগাম আলুর রোপণ একমাস বিলম্বিত হয়। কৃষকরা জানান, অতিরিক্ত যত্ন নিয়ে তারা উৎপাদনে কোনো ঘাটতি হতে দিবে না।

উপজেলার বিভিন্ন আলু উৎপাদনকারী গ্রাম যেমন- পানিয়াল পুকুর, দুড়াকুটি, নিতাই, কালিকাপুর ঘুরে এই প্রতিবেদক জানতে পারেন, কৃষক এবং দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিকরা বিশেষত নারী শ্রমিকরা আগাম আলু বীজ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ সেচের জন্য দুই সারির মাঝে ড্রেন করছে, কেউ নিড়ানি দিয়ে আগাছা দূর করছে, কেউবা কাঠের টুকরো দিয়ে খেতে মাটির ঢেলা ভাঙছে।

কালিকাপুর গ্রামের আলু চাষি ইয়াকুব আলী বলেন, ‘আমি ৩ বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করে ৯০ মণ ফলন আশা করছি। যা বিক্রি করে ২.২০ লাখ টাকা পেতে পারি। যেখানে আমার উৎপাদন খরচ মাত্র ৭৫ হাজার টাকা।’

বললেন দুড়াকুটি গ্রামের কৃষক শামিম হোসেন বাবু বলেন, ‘আমরা ভাগ্যবান যখন এখানকার কৃষকেরা নতুন আলু উত্তোলন করে বিক্রি করে তখন, দেশের অন্যান্য স্থানে সবে মাত্র আলু চাষের জমি তৈরি করা হয়।’

পুটিমারি গ্রামের আলু চাষি সাবেদ আলী বলেন, ‘আমরা একই বছরে একই জমিতে দুইবার আলু আবাদ করে দ্বিগুণ লাভবান হচ্ছি, প্রথমবার সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে আগাম আলু চাষ করে এবং দ্বিতীয়বার ডিসেম্বরে প্রচলিত আলু বপন করে।’

উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা লিয়াকত আলী বলেন, ‘এবার তারা উপজেলায় সাত হাজার হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। যা গতবারের চেয়ে ৫০০ হেক্টর বেশি।’

Comments

The Daily Star  | English

JP headed for yet another split?

Jatiya Party, the main opposition party in parliament, is facing another split centering the conflict between its Chairman GM Quader and Chief Patron Raushan Ershad over MP nominations, party insiders said.

3h ago