দুর্গা বরণে কোলদের বিলবৈলঠা গ্রাম সেজেছে আলপনায়

Bilboiltha.jpg
আলপনায় রঙিন বিলবৈলঠা গ্রামের একটি ঘর। ছবি: স্টার

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বিলবৈলঠা গ্রামে এবার দুর্গোৎসব হচ্ছে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে। গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়ির দেয়ালেই আঁকা হয়েছে রঙিন আলপনা।

আগে শুধু সাদা খড়িমাটি ও রঙ্গিন মাটি দিয়ে আলপনা আঁকলেও এবার প্রথমবারের মতো রঙের ব্যবহার করা হয়েছে। আলপনায় নানা রঙের ব্যবহারের কারণে গ্রামটি এবার সেজেছে নতুন রূপে।

কোল সম্প্রদায় প্রতি বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে আলপনা আঁকে। কোল ভাষায় দুর্গাকে বলা হয় দাঁসে। এই দাঁসেই তাদের ঐতিহ্য আলপনাকে বাঁচিয়ে রেখেছে।

২৪টি কোল সম্প্রদায়ের পরিবার বাস করে বিলবৈলঠা গ্রামে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে। অন্যান্য বছর শুধু খড়িমাটি, চালের গুড়া, কাঠকয়লা, পোড়ামাটি দিয়ে আলপনা আঁকলেও এবার প্রথম ব্যবহার করা হচ্ছে রঙের। বাড়ির মেয়ে বা গৃহবধূ, দিনে রাতে সবাই মিলে দেয়ালে দেয়ালে মনের মাধুরী মিশিয়ে এঁকেছেন আলপনা।

দেবী দুর্গাকে স্বাগত জানাতে প্রতি বছরই আঁকা হয় আলপনা। তবে এবার প্রথম রঙিন করে আঁকা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী বিশোকা টুডু ও তার বোন আশান্তি টুডুকে বাড়ির দেয়ালে ফুল, লতা-পাতা আঁকতে দেখা যায়।

গৃহবধূ ফুলবতি সদ্য আলপনা আঁকা শেষ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতি বছরই দুর্গাপূজা উপলক্ষে আলপনা আঁকি। এ ছাড়া, বাড়িতে কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান থাকলেও আলপনা করা হয়।’

বিলবৈলঠা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সারোদা রানী হাসদা বলেন, ‘বংশ পরম্পরায় তারা আলপনা আঁকছেন। গ্রামের নারী, বধূ ও কিশোরীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী আলপনা টিকিয়ে রেখেছেন, এটি আমাদের সংস্কৃতিরই অংশ। কোল ক্ষুদ্র ণৃ-গোষ্ঠী প্রকৃতিকে ভালবাসে, তাই প্রত্যেকেই স্বীয় মনের মাধুরী মিশিয়ে সৃষ্টি করে কল্পনার আপন ভুবন।’

তিনি জানান, প্রতি বছর গতানুগতিক ধারায় আলপনা করলেও এবার মাটির দেয়ালে বিভিন্ন রঙের ব্যবহার করা হয়েছে।

‘পাশেই বাবুডাইং বনভূমি, এটি দেখতে ও আমাদের গ্রামের সামনের রাস্তা দিয়ে পাখির উড়ে যাওয়ার ছবি তুলতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসেন, গবেষকরা আসেন। তাই এবার আমার গ্রামের দেয়ালগুলোতে নানা রঙ ব্যবহার করে আলপনা এঁকেছি। যাতে আমরা আমাদের সংস্কৃতিটাও তাদের কাছে তুলে ধরতে পারি’, বলেন তিনি।

বিলবৈলঠা গ্রামের মাঝি হারাম (মোড়ল) বিজলু কোল বলেন, ‘প্রতি বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে আমাদের মেয়েরা ঐতিহ্যবাহী আলপনা বংশ পরম্পরায় এঁকে আসছে। প্রতিটি বাড়ির দেয়ালেই আঁকা হয় আলপনা। এরা আমাদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে।’

Comments

The Daily Star  | English

UN says cross-border aid to Myanmar requires approval from both govts

The clarification followed Foreign Adviser Touhid Hossain's statement on Sunday that Bangladesh had agreed in principle to a UN proposal for a humanitarian corridor to Myanmar's Rakhine State

1h ago